দুই মন্ত্রীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিসভা

আদালত অবমাননার অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই মন্ত্রী আর পদে থাকতে পারবেন কি না সেই সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভা নেবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আপিল বিভাগ দুই মন্ত্রীর দণ্ড ঘোষণার পর ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের অ্যাটর্নি জেনারেল এ কথা বলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সংবিধানে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা আছে বলে আমার মনে হয় না। তারা মন্ত্রিপরিষদে থাকবেন কি না তা তাদের নৈতিক বিষয়। কাজেই এ বিষয়ে মন্ত্রিসভাই সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিস্তারিত মন্তব্য করার আগে রায় দেখতে হবে। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ এবং তা দেখার পর আপনাদের অনেক প্রশ্নের জবাব মিলেবে।

তবে এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার কাজল বলেছেন, দুই মন্ত্রীর সাজা হওয়ায় পর এখানে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বড় প্রশ্ন নয়, বড় প্রশ্ন হচ্ছে নৈতিকতার। আদালতের রায়ের পর এটাতো পরিষ্কার যে, তারা দোষী সাব্যস্ত। এ ব্যাপারে এমপিদের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে নেই।

এর আগে আজ রবিবার সকালে আদালত অবমাননার দায়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে সাজা দিয়েছেন আপিল বিভাগ। দুজনকেই ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে সাত দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আদালত নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দিলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর সাজা দেয়ার কথাও জানিয়েছে আপিল বিভাগ। জরিমানার এই টাকা কিডনি ফাউন্ডেশন অথবা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে দিতে হবে।

গত ৫ মার্চ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আলোচনা সভায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে বাদ দিয়ে মীর কাসেমের মামলার আপিল শুনানি পুনরায় করার দাবি জানান দুই মন্ত্রী। এ বক্তব্য মিডিয়ায় প্রকাশের পর গত ৮ মার্চ দুই মন্ত্রীকে তলব করেন পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।

গত ১৫ মার্চ দুই মন্ত্রী আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন। তবে খাদ্যমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় তার পক্ষে আদালতে সময় চাওয়া হয়েছিল। আদালত বিষয়টি শুনানির জন্য ২০ মার্চ দিন পুনর্নিনির্ধারণ করেন।

২০ মার্চ দুই মন্ত্রী আদালতে হাজির হয়ে তাদের বক্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন। কিন্তু খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বক্তব্য সন্তোষজনক না হওয়ায় ২৭ মার্চ তাদের দুজনকেই ফের আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন আদালত। আজ আদালতে হাজির হলে আপিল বিভাগ এই রায় ঘোষণা করলো।



মন্তব্য চালু নেই