দুই অসহায় শিশুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে বাড়ি ছাড়ল বাবা-মা

এক নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চারদিন কোনও খাবার ও জল পায়নি শিশু দু’টি। দেখারও কেউ ছিল না।

ক’দিন আগেই এক দুর্ঘটনার জেরে দিল্লির রাস্তায় পড়ে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল এক ব্যক্তির। রক্তাক্ত অবস্থায় বহুক্ষণ পড়ে থাকতে দেখেও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি কেউ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আর এক অমানবিকতার নজির গড়ল রাজধানী। দুই অসহায় শিশুকে ফাঁকা বাড়িতে ফেলে রেখে চলে যান বাবা-মা। চারদিন পরে অনাহারে দীর্ণ, পোকায় সংক্রমিত দুই শিশুকে উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা।

ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির সময়পুর বদলি এলাকায়। এক দম্পতি তাঁদের তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নেপালি কলোনির একটি বাড়িতে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, তিন সন্তানের একজনকে নিয়ে দু’মাস আগেই বাড়ি ছেড়েছিলেন মা। তারপর আট বছরের আলকা এবং তিন বছরের জয়তি বাবার কাছেই বাড়িতে ছিল এতদিন। কিন্তু কর্মহীন এবং নেশায় আসক্ত বাবা গত ১৫ অগস্ট বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন দুই সন্তানকে রেখে। আর ফেরেননি।

এরপর এক নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চারদিন কোনও খাবার ও জল পায়নি শিশু দু’টি। যে ঘরটিতে তারা ছিল, সেখানে হাওয়া চলাচলের কোন ব্যবস্থাও ছিল না। ফলত মশা-মাছিতে ভরপুর এক পরিবেশের মধ্যে ম্যাগোট আক্রান্ত হয়ে পচতে শুরু করে তাদের শরীরের কিছু অংশ। সেই ক্ষত থেকে দুর্গন্ধ বেরনোর পরে তা নাকে পৌঁছায় প্রতিবেশীদের। গন্ধের সূত্রপাত খুঁজতে গিয়ে তাঁরা ঘরে এসে দেখেন এই কাণ্ড। তৎক্ষনাৎ পুলিশকে খবর দিয়ে উদ্ধার করা হয় দু’জনকে।

এর পরে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় বাবাসাহেব আম্বেদকর হাসপাতালে। হাসপাতালের ডাক্তাররাও চমকে যান শিশু দু’টির করুণ পরিণতি দেখে। চারদিন বিশেষ নজরে রেখে চিকিৎসা চলে তাদের। পুলিশ সূত্রে খবর, আপাতত তাদের অবস্থা আগের তুলনায় অনেকটাই ভাল। দু’জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত হাসপাতালেই থাকবে বলে জানা গিয়েছে। সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরে তাদের ঠিকানা হবে পুনর্বাসন কেন্দ্র।



মন্তব্য চালু নেই