দাশিয়ারছড়া হচ্ছে মুজিব-ইন্দিরা ইউনিয়ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর সামনে রেখে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়া এখন প্রায় প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের মধ্যে দিয়ে পাল্টে যাচ্ছে ঐতিহাসিক ছিটমহল দাশিয়ারছড়ার নাম। ওই দিন থেকে দাশিয়ারছড়া হবে মুজিব-ইন্দিরা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)।

আগামী বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাশিয়ারছড়া ইউপি কমপ্লেক্স ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাফর আলী।

রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, দাশিয়ারছড়ায় সাজ সাজ রব চলছে। প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে চলছে ব্যাপক আয়োজন। দাশিয়ারছড়ায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, দল ও ব্যক্তির শতাধিক তোরণ, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে।

সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নাগেশ্বরী-ফুলবাড়ি সড়কের সঙ্গে দাশিয়ারছড়ার সংযোগ সড়ক তৈরি করছে। পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ প্রায় শেষের পথে। এছাড়া রাস্তা সংস্কার ও পরিষ্কার, কালীহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট, বাজারের পুরোনো রাস্তার ওপর তৈরি স্থাপনা পরিচ্ছন্নকরণ, নীলকমল নদীর ওপর অস্থায়ী বেইলি সেতু নির্মাণ, দাশিয়ারছড়া-কালীহাট রাস্তা প্রশস্তকরণ এবং অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগের কাজ চলছে।

এর আগে, সেখানে ভূমি কার্যালয়, তিনটি কমিউনিটি হাসপাতাল, তথ্যকেন্দ্র ও অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি বসানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর ঘিরে সাবেক ছিটবাসীদের মধ্যে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। দীর্ঘ ৬৮ বছরের অন্ধকার জীবনের অবসানের স্বপ্ন দেখছেন বিলুপ্ত ছিটবাসীরা।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত সফর সূচিতে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ১৫ অক্টোবর সকালে হেলিকপ্টারে করে ফুলবাড়ি হেলিপ্যাডে নামবেন। এরপর সড়ক পথে দাশিয়ারছড়া যাবেন। প্রধানমন্ত্রী দাশিয়ারছড়া কালীহাট বাজার সংলগ্ন প্রস্তাবিত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সুধী সমাবেশে যোগ দেবেন। সেখানে তিনি দাশিয়ারছড়া মুজিব-ইন্দিরা ইউপি কমপ্লেক্স ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং বিদ্যুৎ-সংযোগসহ ২৩টি ফলক উন্মোচন করবেন।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জানান, মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি হচ্ছে বিগত ৬৮ বছরের ছিটমহলবাসীর বন্দিদশা থেকে মুক্তির সনদ। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজে প্রবাস জীবনযাপন করেছেন। তিনি জানেন রাষ্ট্র ছাড়া জীবনযাপনের কষ্ট। স্বাধীনতা ছাড়া বাঁচার যন্ত্রণা। সে উপলব্ধি থেকে তার সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে আজকে ছিটমহলবাসী মুক্তি পেয়েছে। তার সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং আন্তরিকতার কারণে ছিটমহল বিনিময় সম্ভব হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন সফল করার লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে। দাসিয়ারছড়ায় ইউনিয়ন কমপ্লেক্স বিদ্যুৎ সংযোগসহ মোট ২৩টি ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সে কারণে ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারীর ইউএনওকে দাসিয়ারছড়ায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই