নিজের আগ্রহ নেই

দল চাইলে প্রার্থী হবেন খোকা

আসন্ন ঢাকা সিটি মেয়র নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নন ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। তবে দল চাইলে নির্বাচন করবেন তিনি।
সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে খোকা এ কথা বলেন। বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়াসহ দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি।
এ সময় খোকা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বর্তমান অবৈধ সরকার দেশের গণতন্ত্র গলাটিপে হত্যা করেছে। পুলিশ ও র‌্যাব দিয়ে প্রতিনিয়ত নির্যাতন, গুম ও খুন করে যাচ্ছে।’
বিএনপির এই ভাইস প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন, ‘বর্তমান সরকার চলমান আন্দোলনে ভীত হয়ে এই আন্দোলনকে ভিন্ন পথে প্রবাহিত করার লক্ষ্যেই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের আয়োজন করেছে। তবে নির্বাচন যদি সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়, তাহলে বিএনপি জিতবে, এতে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। চলতি সরকারের অধীনে গাজীপুরসহ পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।’
দলের পক্ষ থেকে তাকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়া হলে তিনি নির্বাচন করবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে খোকা বলেন, ‘তার আপত্তির কথা দলের নেতাদের তিনি বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করবেন। এরপরও যদি তাকে নির্বাচনে অংশ নিতে বলা হয়, দলের বৃহত্তর স্বার্থে তিনি সে সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন।’
দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন সাদেক হোসেন খোকা। তবে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, লন্ডনে অবস্থানরত দলের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যানসহ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সব নেতার সঙ্গেই তার যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খোকা বলেন, ‘বাংলাদেশ কেন ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের স্বৈরশাসকরাও অবৈধভাবে শাসন করেছে। প্রচুর ক্ষমতাবান মনে করেও তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণও কোনো অবৈধ স্বৈরশাককে বেশিদিন ক্ষমতায় রাখবে না। আজকে যদি র‌্যাব পুলিশের সাপোর্ট না নিয়ে সরকার মাঠে নামে ৩০ মিনিট তো বেশি বলেছি, দূরবীন দিয়েও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
সাদেক হোসেন খোকা তার বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমান সরকার গণতন্ত্রবিরোধী। হত্যা থেকে শুরু করে হেন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেনি।’
সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি বলেন, ‘আমরা অতীতে সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। বর্তমানে সরকার সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘোষণা করেছে বিএনপি জোটের আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে। এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না তা চেয়ারপারসনসহ নীতিনির্ধারণী ফোরাম পর্যালোচনা করছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিলেও আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
খোকা অভিযোগ করে বলেন, ‘দলীয় চেয়ারপসন ছাড়া কেন্দ্রীয় নেতাদের বেশিরভাগই অবৈধ সরকারের কারাগারে অন্তরীণ। এসব করে সরকার পুরো দেশকে অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করে ফেলেছে। নিজেরাই পেট্রোলবোমা মেরে বিএনপির ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। বিএনপি নিজেদের স্বার্থে আন্দোলন করছে না, জনগণের স্বার্থ রক্ষায় এই আন্দোলন। জনগণ এখন আর বোকা না। তাই জোর করে ক্ষমতায় বেশিদিন টিকতে পারবে না এ সরকার। তাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল লতীফ সম্রাট, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু, সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, কোষাধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া, বিএনপি নেতা আবদুল খালেক আকন্দসহ বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।



মন্তব্য চালু নেই