তিস্তার পানি নিয়ে মোদির আশ্বাস কি মিথ্যা?

বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের মাটিতে পদার্পন করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শুক্রবার দিল্লীতে তার সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এই বৈঠকের পর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। শুক্রবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের প্রধান বিষয়বস্তু ছিল তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি, ছিটমহল এবং স্থলবন্দর চুক্তি।

নরেন্দ্র মোদী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আশ্বস্ত করেন যে, যত দ্রুত সম্ভব ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে এই চুক্তিগুলি বাস্তবায়ন হবে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যাপারেও ভারতকে সাহায্য করার আহ্বান জানান মো. হামিদ। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতের সহযোগিতার প্রশংসা করেন তিনি।

তিস্তা নদী নেপাল-সিকিম হয়ে ভারতের শিলিগুড়ি দিয়ে ঢুকেছে বাংলাদেশের রংপুরে। এই তিস্তার পানি নিয়েই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ভারতে গত ইউপিএ সরকারের সময় প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু বাদ সাধেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জি। তিনি কোনভাবেই তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের পক্ষে নন। মমতার বক্তব্য হলো, তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন হলে পানির অভাবে পশ্চিমবঙ্গ শেষ হয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তার পূর্বসুরীর মত একই কায়দায় কথা দিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে। কথা দেওয়ার জন্যই মোদী কথা দিলেন, নাকি সত্যিই তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন হবে- সেটাই এখন প্রশ্ন। কারণ, মোদী-মমতার সম্পর্ক সাপে-নেউলের মত। নরেন্দ্র মোদী ডানদিকে গেলে উনি যান বামদিকে। কেন্দ্রের কোন বৈঠকে মমতা যান না। অন্য মন্ত্রীদের পাঠান।

সেখানে মোদী কীভাবে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির ব্যাপারে মোঃ হামিদকে আশ্বস্ত করলেন? যেখানে তিনি খুব ভালো করেই জানেন, পশ্চিমবঙ্গে মমতার সরকার যতদিন থাকবে ততদিন এই চুক্তি বাস্তবায়ন হবে না।

কলকাতায় সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে মোদী কি মিথ্যা আশ্বাস দিলেন মো. আবদুল হামিদকে? বাংলাদেশের সঙ্গে কি তিনি প্রহসন করলেন?

এই প্রশ্নের উত্তর সময়ই বলে দেবে বলে মনে করছে কলকাতার এই সচেতন মহল।



মন্তব্য চালু নেই