দরপতন

তিন মণ মরিচের দামে মিলছে না ১ কেজি গরুর মাংস

জেলার সদর উপজেলাসহ গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজারগুলোতে নামমাত্র দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। তিন মণ কাঁচা মরিচ বিক্রি করেও মিলছে না এক কেজি গরুর মাংস।

জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি মন কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। বর্তমান বাজারে ৩ মণ কাঁচা মরিচ বিক্রি করে এক কেজি গরুর মাংস কিনতে পারছেন না মরিচ চাষীরা। বাজারে এখন এক কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৪০ টাকায়।

চাষীরা জানান, গেল বছর এক মণ কাঁচা মরিচ ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন তারা।

ধাপেরহাটের বৌ-বাজার এলাকার মরিচ চাষী আবদুর রহমান জানান, প্রতি বছর তাদের জমিতে মরিচ চাষ করে খরচ বাদে ভালোই লাভ করতেন। কিন্তু চলতি বছর মরিচের চাষ করে ব্যাপক লোকসান গুনছেন তারা।

সম্প্রতি ধাপেরহাট বন্দরে মরিচ বিক্রি করতে আসা চাষীরা মরিচের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দুঃখ ও ক্ষোভে রংপুর-বগুড়া মহাসড়কে ছিটিয়ে ফেলে রাখেন মরিচ। এমনকি ক্রেতা না থাকায় অনেক চাষী হাটের ড্রেনেও মরিচ ফেলে দিয়ে যান।

ধাপেরহাট এলাকার মরিচ চাষী মিজানুর রহমান জানান, গেল মৌসুমে মরিচ চাষে ব্যাপক লাভ হওয়ায় চলতি বছরে অধিক পরিমানে জমিতে মরিচ চাষ করেন এলাকার চাষীরা। এ বছরও মরিচের ফলন বাম্পার হয়েছে। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই মরিচের বাজারে ধ্বস নামায় আর্থিকভাবে চাষীরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। গত এক মাস ধরে একই দামে মরিচ বিক্রি হওয়ায় কৃষকরা হতাশায় ভুগছেন।

মরিচ চাষী খয়বার জামান জানান, এক মণ মরিচ জমি থেকে তুলতে শ্রমিক, পরিবহন ভাড়া ও হাটের খাজনা দিয়ে খরচ হয় প্রায় ১৫০ টাকা। সেখানে এক মণ মরিচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮০-১০০ টাকা দরে। তার ওপর বিজ, সার, কিটনাশকসহ এক মণ মরিচ উৎপাদন করতে কৃষকের প্রায় ২০০ টাকা খরচ হয়েছে।

তিলকপাড়া গ্রামের মরিচ চাষী আলম মিয়া জানান, বাজারে মরিচ বিক্রি করতে এসে মহা দুর্ভোগে পড়েছেন তিনি। ক্রেতাশুন্য বাজারে মরিচের দাম খুবই কম।

খামার পাড়া গ্রামের ওয়াহেদ আলী জানান, এ বছর মরিচের দাম না থাকায় কৃষকের লোকসান গুনতে হচ্ছে। মরিচের বাজার ভালো না হলে কৃষরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি বছর শুধু সাদুল্যাপুর উপজেলায় ৪১০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। প্রতি এলাকায় চাষ করা জমিতে মরিচের ব্যাপক ফলন হয়েছে।

সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ওবায়দুর রহমান মণ্ডল জানান, মরিচের বাম্পার ফলন হলেও অন্যান্য বছরের তুলনায় বাজারে মরিচের দাম না থাকায় এলাকার মরিচ চাষীরা ব্যাপক লোকসান গুনছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে কৃষকদের বেশ ক্ষতি হবে।



মন্তব্য চালু নেই