তিন প্রধানকে ২০ দলের চ্যালেঞ্জ

জনসভায় ‘রাজনৈতিক’ বক্তব্য দেয়া নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের উর্দি খুলে রাজনীতির মাঠে নামার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, রাজনৈতিক সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের পথে না গিয়ে সরকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানদের রাজনীতির মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর যেসব কর্মচারীর রাজনৈতিক খায়েশ রয়েছে আমরা তাদেরকে উর্দি খুলে প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে রাজনীতি মাঠে নামার আহ্বান জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রংপুরের মিঠাপুকুরে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে নির্বাচনে অংশ না নিয়ে ভুল করেছে, তার খেসারত জনগণ দিবে না। বিএনপি-জামায়াতকেই এর খেসারত দিতে হবে। এদেশে আমরা আর কোনো অশুভ শক্তির উত্থান হতে দেব না।’
তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনের দাবি তুলে যারা এভাবে হরতাল অবরোধের নামে নাশকতা সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করছে, তারা আসলে কী চায়? দেশে তো সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হয়েছে। জনগণ ভোট দিয়েছে। যারা নির্বাচন চায়নি তারা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে এরকম সন্ত্রাস করেছে।’
এ অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াতের সংখ্যা খুবই কম দাবি করে র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীদের সংখ্যা খুবই কম। এদের নিশ্চিহ্ন করা কোনো ব্যাপারই নয়। আমরা এই অপশক্তিকে ২০১৩ সালে রুখে দিয়েছি। এবারও রুখে দেব ইনশাআল্লাহ।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলা যারা দেখতে চায় না। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চায় না। মানুষ দু’বেলা খেয়ে পরে ভালো থাকুক এসব চায় না। তারা খুনি। তাদের এদেশে প্রয়োজন নেই। তাদের দমনে যা যা করা দরকার সবই করা হবে।’
এটি ছিল সন্ত্রাস ও নাশকতারোধে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা।

এর প্রতিবাদে ২০ দলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রংপুরের মিঠাপুকুরে আইজিপি ও র‌্যাবের ডিজি জনসভায় রাজনীতিবিদদের ভাষণ দেয়ার মতো করে রীতিমতো রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন। তারা বিরোধী দল ও জনগণকে কঠোর ভাষায় হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন। দেশে জাতীয় নির্বাচন কখন হবে না হবে সে ব্যাপারে তারা মন্তব্য করেছেন। আন্দোলনকারীদের জীবননাশের হুমকি দিয়ে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করার কথা বলেছেন। বিরোধী দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কটূক্তি করে তারা ক্ষমতাসীদের রাজনৈতিক এজেন্ডার পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন।
এর আগে বিজিবির ডিজিও প্রেস করফারেন্স করে একইভাবে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা আরো বলেছেন, এসব ঘটনা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক ও সভ্য দেশে অকল্পনীয়। জনগণের কষ্টার্জিত অর্থে বেতন-ভাতা গ্রহণকারী প্রজাতন্ত্রের এসব কর্মচারীর এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। দেশে জনপ্রতিনিধিত্বশীল কোনো সরকার থাকলে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও এখতিয়ার বহির্ভূত এমন সব বেআইনি বক্তব্য প্রদানের দায়ে তাদেরকে অবশ্যই চাকরিচ্যুত করে আইনামলে আনা হতো।
তারা অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীনরা এতোটাই দেউলিয়া হয়ে পড়েছে যে, এখন রাজনৈতিক সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের পথে না গিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানদের রাজনীতির মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর যেসব কর্মচারীর রাজনৈতিক খায়েশ রয়েছে আমরা তাদেরকে উর্দি খুলে প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে রাজনীতি মাঠে নামার আহ্বান জানাচ্ছি।
একই সঙ্গে জনগণের পাশে থেকে তাদের আইনসম্মত পন্থায় কর্তব্য পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।



মন্তব্য চালু নেই