তারেক-মিশুক নিহতের মামলায় বাসচালকের যাবজ্জীবন
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের মামলায় বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল-মাহমুদ ফাইজুল কবীর এ রায় দেন। প্রায় পাঁচ বছর ধরে বিচার চলার পর আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা হলো আজ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মানিকগঞ্জ জজ কোর্টের এপিপি আফছারুল ইসলাম মনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাসচালক জামিরকে ৩০৪ ধারায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর জন্য দোষী সাব্যস্ত করে আদালত সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়াও তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শালজানা গ্রামে কাগজের ফুল সিনেমার সুটিংস্পট দেখে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ কয়েকজন মাইক্রোবাস যোগে ঢাকায় ফিরছিলেন। এসময় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। পথিমধ্যে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোকা এলাকায় তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে বিপরীতমুখি চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের সংর্ঘষ হয়। কিছু বুঝে উঠার আগেই প্রাণ হারান তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন। নিহত অন্য তিনজন হলেন- তারেক মাসুদের চলচ্চিত্র প্রডাকশন সহকারী ওয়াসিম ও জামাল এবং মাইক্রোবাস চালক।
এই দুর্ঘটনায় আহত হন তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিল্পী ঢালী আল মামুন ও তার স্ত্রী দেলোয়ারা বেগম জলি।
এ ঘটনায় ঘিওর থানা পুলিশের তৎকালীন এসআই লুৎফর রহমান বাদী হয়ে একটি দুর্ঘটনাজনিত মামলা দায়ের করেন। পরে ডিবি ইন্সপেক্টর আশরাফ-উল ইসলাম মামলার তদন্ত করে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের বাস চালক জামির হোসেনের বিরুদ্ধে ২৭৯,৩৩৭,৩৩৮(ক),৩০৪ ও ৪২৭ ধারায় আদালতে চার্জশিট দেন।
দুর্ঘটনার পর বাস চালক পালিয়ে গেলেও পরে মেহেরপুরে এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছিলেন। সে সময় তার মুক্তির দাবিতে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বিভিন্ন বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠন।পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন। বর্তমানেও তিনি জামিনে রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন মানিকগঞ্জ জজ কোর্টের এপিপি আফসারুল ইসলাম মনি আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাধব সাহা।
মন্তব্য চালু নেই