তারেককে লন্ডন থেকে ধরে আনা হবে : আইনমন্ত্রী

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে বসে আপিল করতে পারবে না জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘তাকে (তারেক) ধরে আনার চেষ্টা করা হবে।’

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে মুদ্রাপাচার মামলায় তারেক রহমানের সাজার প্রতিক্রিয়ায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

সকালে অর্থপাচার মামলায় তারেক রহমানকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়। ২০ কোটি টাকা জরিমানাও করেন আদালত।

মুদ্রাপাচার মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আপিলের শুনানি করে বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চ ওই রায় ঘোষণা করেন।

সেই সঙ্গে তারেকের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের কারাদণ্ডও বহাল রাখেন আদালত। তবে তাকে বিচারিক আদালতের দেয়া ৪০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড কমিয়ে ২০ কোটি টাকা করা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এই সাজার প্রেক্ষিতে তাকে (তারেক রহমান) ধরে আনার চেষ্টা করা হবে। যদি এটা সম্ভব না হয়, তা হলে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চুক্তি করে হলেও আনা হবে।’

‘এতেও যদি সম্ভব না হয়, তা হলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে আনা হবে তারেক রহমানকে।’

তবে তারেক রহমান বাংলাদেশে এসে আত্মসমর্পণ করে ‘সাজা খেটে’ আপিল করতে পারবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। অন্যদিকে পলাতক তারেক আত্মসমর্পণ করলে বা তাকে গ্রেপ্তার করা গেলে সেই সময় থেকে তার দণ্ড কার্যকর হবে বলে হাইকোর্ট জানিয়েছে।

খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টাসহ আরও দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির অভিযোগে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বড় ভাই সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহিম বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য। জরুরি অবস্থার মধ্যে ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে মামুন কারাগারেই আছেন।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আরও মামলা থাকায় দেশে ফিরে আত্মসমর্পণ করলে তিনি জামিন পাবেন কি না, এ প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তার (তারেক রহমান) মায়ের (খালেদা জিয়া) নামেও তো অনেক মামলা আছে। তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলে তারেক রহমান পাবে না কেন?’

অর্থপাচারের অভিযোগে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলা করে দুদক। বিচার শেষে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেন ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেন। অপর আসামি গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ৪০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।

বিচারিক আদালতে তারেকের খালাস পাওয়া প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তারেক রহমান প্রথমে বিচারককে প্রভাবিত করে খালাস পান। এ ঘটনার দু’দিন পর ওই বিচারক দেশ ছেড়ে সপরিবারে মালয়েশিয়ায় চলে যান। পরে তা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।’

এ মামলায় অভিযোগ করা হয়, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ নির্মাণ কনস্ট্রাকশনস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন মামুন।

২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ‘বিভিন্ন পন্থায়’ ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে মামুনের অ্যাকাউন্টে পাচার করা হয়, যার মধ্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা তারেক খরচ করেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।



মন্তব্য চালু নেই