তবুও জাতীয় দল নিয়ে ভাবছেন না মেহেদী!

দেশের ক্রিকেটের পাঁচ প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম, শাহরিয়ার নাফীস, সাব্বির রহমান রুম্মন, তামিম ইকবাল ও মমিনুল হক তার ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছেন; কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত কেউ তাকে টপকাতে পারেননি তাকে।

ঢাকা ডায়নামাইটসের ওপেনার মেহেদী মারূফ এখন পর্যন্ত রান তোলায় সবার ওপরে। এক ঝাঁক তারার মেলা ঢাকায়। কুমারা সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়বর্ধনে, ডোয়াইন ব্রাভো এবং আন্দ্রে রাসেলের মত বিদেশি তারকা আর সাকিব, নাসির ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত- কত নাম!

এমন অনেক তারার ভীড়ে হারিয়ে না গিয়ে উল্টো ব্যাট হাতে উজ্জ্বল মেহেদী মারূফ। আসরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত তিনিই সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকার। খুব স্বাভাবিকভাবেই তার ভেতর টপ স্কোরার হবার অদম্য ইচ্ছে জাগার কথা; কিন্তু শুনে অবাক হবেন। মেহেদী মারূফের ভাবনায় ওসব নেই।

এ তরুণ ওপেনার আপাততঃ ওসব নিয়ে ভাবছেন না। তার চিন্তায় ব্যক্তিগত লক্ষ্যের চেয়ে দলের গুরুত্ব ও প্রাধান্য অনেক বেশি। তাই তো মুখে এমন সংলাপ, ‘আসলে ব্যাক্তিগত অর্জনের চেয়ে দলগত পারফরম্যান্স এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শেষ দুটি ম্যাচ হেরে গেছি। আমাদের লক্ষ্য এখন সামনের ম্যাচগুলো জেতা।’

এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত তার ইনিংসগুলো- ৩৪*+৭৫*+২৫+১০+৬০+৩৩+৬+৩৫। এই অংকগুলো একটু খুঁটিয়ে দেখলেই পরিষ্কার হবে মেহেদী মারূফের ব্যাট শুরুর দিকেই একটু বেশি উজ্জ্বল ছিল। শুরুতে তার ব্যাট যত উজ্জ্বল ছিল, সময়ের প্রবাহমানতায় তা খানিকটা নিষ্ক্রীয়।

প্রথম পাঁচ ইনিংসে দুবার নট আউট। আর দুটি ফিফটি। আরও আছে। প্রথম দিকে তিনি হাত খুলে খেলার পাশাপাশি ইনিংসকে দীর্ঘায়িত করেছেন; কিন্তু চট্টগ্রামে গিয়ে আর তা পারেননি। ভাল শুরুর পর ৩৩, ৬ ও ৩৫ রানে আউট হয়ে গেছেন।

এই না পারার হতাশা পোড়াচ্ছে তাকে, ‘অবশ্যই আমার দিক থেকে হতাশাজনক। আমি প্রথম দিকের ম্যাচগুলো টেনে নিতে পেরেছিলাম; কিন্তু শেষ দুটি ম্যাচ পারিনি। চেষ্টা করছি, আবার যেন ধারাবাহিকতায় ফিরতে পারি।’

এই টেনে নিতে না পারার কারণ ম্যাচ কন্ডিশন। এ কথা জানিয়ে মারুফ বলেন, ‘দলের পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিংয়ের ধরণ পরিবর্তন করতে হয়। প্রয়োজন থাকে, যে স্ট্রাইক রেট বেশি নিয়ে খেলতে হবে। হাই রিক্স নিতে হয়। হয়তোবা হাই রিক্স নিতে গিয়ে উইকেট হারিয়েছি আমি।’

মানছেন শুরুতে একটু বেশি ঝুঁকি নিয়ে বাড়তি স্ট্রোক খেলে রান পেয়েছেন; কিন্তু তারপর একটা পর্যায়ে গিয়ে তেড়েফুঁড়ে শট খেলার চেষ্টা না করে সিঙ্গেলস-ডাবলসে খেলে গেলেই হয়ে যেত। তিনি বলেন, ‘আমি তা না করে একটু বেশিই ঝুঁকি নিয়ে খেলেছি। হয়ত তাই শেষ কটি ইনিংস বড় হয়নি।’

তার ঝড়ো ব্যাটিং দেখে কেউ কেউ মনে করছেন জাতীয় দলে খেলার সামর্থ্য আছে এ ওপেনারের। সে কথা তার কানেও গিয়েছে। তবে মারূফ যে খুব সিরিয়াসলি তা নিয়ে ভাবছেন, এমন নয়। জাতীয় দলে খেলা নিয়ে তার কথা, ‘হ্যাঁ কিছুটা চিন্তা চলে এসেছে। তবে খুব বেশি না। যেভাবে বিপিএল শুরু করেছিলাম, সেটা ছিল নিজেকে চেনানো। তবে এখন আপাতত জাতীয় দল, নিউজিল্যান্ড সিরিজ নিয়ে ভাবছি না। আমি বাংলাদেশের টপ লেভেলের ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে নিজের নামটি ছড়িয়ে দিতে চাই। কোচ সুজন ভাইয়ের সাহায্য নিয়ে আমার ব্যাটিংয়ের ধরণ আন্তর্জাতিক মানের করতে চাই। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।’



মন্তব্য চালু নেই