ঢেঁকি দিয়ে বৃদ্ধ মায়ের কোমর ভেঙে দিল দুই ছেলে!

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ঢেঁকি দিয়ে আঘাত করে বৃদ্ধ মায়ের কোমর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আরো দুজন আহত হয়েছেন।

গতকাল শনিবার উপজেলার মাঝিয়াকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

আহতরা হলেন মাজেদা বেগম (৬৫), তাঁর মেয়ে আফরোজা আক্তার (৩৫) ও ভাতিজা মো. মাসুম (৪২)। আহতদের মধ্যে মাসুমের মাথায় দা দিয়ে কোপ দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাঁদের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাঁদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

আহত মাজেদার মেয়ে আফরোজা ও জুলেখা অভিযোগ করেন, তাঁদের তিন ভাইয়ের মধ্যে নাজমুর রশিদ মারা গেছেন। নাজমুর রশিদের রেখে যাওয়া পৈতৃক সম্পত্তির কিছু অংশ সম্প্রতি অপর দুই ভাই হারুনুর রশিদ ও মঞ্জুর রশিদ মিলে বিক্রি করেছেন। বাকি যে সম্পত্তি আছে বর্তমানে তাও ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ নেন তাঁরা। বিষয়টি জানার পর নাজমুর রশিদের দুই মেয়ে জাকিয়া সুলতানা সন্ধ্যা ও নিগার সুলতানা সুইটি তাঁদের দাদি মাজেদা বেগমকে জানান।

গতকাল শনিবার দুপুরে মাজেদা বেগম ছেলের রেখে যাওয়া জমিজমা ইজারা দিতে হারুনুর রশিদ ও মঞ্জুর রশিদকে বাধা দেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হারুন ও মঞ্জুর ক্ষিপ্ত হয়ে ঢেঁকি দিয়ে মা মাজেদার কোমরে আঘাত করেন এবং বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় বোন আফরোজা ও চাচাতো ভাই মাসুমকেও লাঠিপেটা করেন দুই ভাই। তাঁদের সঙ্গে থাকা একই এলাকার হাবিবুর নামের এক ব্যক্তি মাসুমের মাথায় দা দিয়ে কোপ দেন। তাঁদের চিৎকারে প্রতিবেশী ও স্বজনরা এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে।

মাজেদার মেয়ে জুলেখা বলেন, ঢেঁকি দিয়ে আঘাত করায় মাজেদা বেগমের কোমর ভেঙে গেছে। তিনি সুস্থ হলে তাঁরা মামলা করবেন।

আহত মাসুমের ছোট ভাই মাছরুল জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। শনিবার তাঁর ছোট ভাই মাসুম ও তিনি চাচিকে (মাজেদা বেগম) মারধর করার প্রতিবাদ করতে গেলে মাসুমের মাথায় দা দিয়ে কোপ দেন হাবিবুর।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাইমুল হক বলেন, অচেতন অবস্থায় মাজেদাকে হাসপাতালে আনা হয়। মাজেদার কোমরে ইন্টারনাল ইনজুরি থাকতে পারে। অবস্থা ছিল খুবই খারাপ, উন্নত চিকিৎসার জন্য মাজেদা ও তাঁর ভাতিজা মাসুমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু হানিফ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে শনিবার সালিশ করার কথা ছিল। তারা নিজেরাই খুব উত্তেজিত ছিল বিধায় সালিশ হয়নি। আমি চলে আসার পর নিজেরা মারামারিতে লিপ্ত হয়।’

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম খান বলেন, এখনো এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



মন্তব্য চালু নেই