একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেলপথ অনুমোদন

ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ডুয়েলগেজ রেললাইন তৈরি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বিদ্যমান মিটারগেজ লাইনের সমান্তরালে সাড়ে একুশ কিলোমিটার দীর্ঘ এ ডুয়েলগেজ লাইন তৈরি হবে। এজন্য আজকের একনেক সভায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনের সমান্তরাল একটি ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ নামক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।’
তিনি জানান, এই প্রকল্পটি বাংলাদেশ রেলওয়ে ৩৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত করবে। মোট ব্যয়ের মধ্যে ১২৯ কোটি টাকা সরকার দেবে। বাকি ২৪৯ কোটি টাকা জাপান সরকার অনুদান হিসেবে দেবে। প্রকল্পটি আগামী ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে।
মুস্তফা কামাল আরো বলেন, ‘ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ উভয় শহরই অত্যন্ত জনবহুল। এখানকার যানজট সবসময়ই আমাদের মূল্যবান শ্রম ঘণ্টা নষ্ট করছে।এখন ডুয়েলগেজ রেললাইন তৈরি হলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ সহজতর এবং স্বল্প সময়ে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণসহ সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে ১ হাজার ৩১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয়টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পগুলোর মধ্যে দুটি নতুন ও চারটি সংশোধিত প্রকল্প।
এসব প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬৯৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা ও প্রকল্প সাহায্য ৩৩৬ কোটি ৫ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
বৈঠকে ‘ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেকশনে বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনের সমান্তরাল একটি ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ’ নামক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে ৩৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। মোট ব্যয়ের মধ্যে ১২৯ কোটি টাকা সরকার দেবে। বাকি ২৪৯ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে দেবে জাপান সরকার। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এ প্রকল্প সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আরো জানান, ‘ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ উভয় শহরই অত্যন্ত জনবহুল। এখানকার যানজট সবসময়ই আমাদের মূল্যবান শ্রমঘণ্টা নষ্ট করছে। ডুয়েলগেজ রেললাইন তৈরি হলে বর্তমানের ৩২টি ট্রেনের জায়গায় ৭৬টি ট্রেন নিয়মিত চলাচল করতে পারবে। ফলে দৈনিক ৯৩ হাজার যাত্রী পরিবহণ করা যাবে। এখন দৈনিক ২৩ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছেন।
একনেক সভায় রেলের অপর একটি সংশোধিত প্রকল্প পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) অনুমোদন দেওয়া হয়। মূল অনুমোদিত প্রকল্পটি ১৪৬ কোটি টাকার হলেও আজকের সভা ৭২ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে ২১৮ কোটি টাকায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়। মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের মধ্যে সরকার দেবে ১৩১ কোটি টাকা। বাকি ৮৭ কোটি টাকা জাপান সরকার অনুদান হিসেবে দেবে। রেলওয়ের ক্যারেজ ও ওয়াগন মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্য চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ওয়ার্কশপের প্রয়োজনীয় আধুনিকীকরণ করতেই সংশোধিত এ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন করবে বলে সভায় জানানো হয়।
আজকের একনেক সভায় জানানো হয়, ঢাকা শহরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মেটাতে ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ছয়টি কলেজ স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।
রাজধানীর হাজারীবাগ, উত্তরা, রূপনগর, ডেমরা, কাফরুল, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরখান, জুরাইন, মগবাজার ও কামরাঙ্গীরচরে এই ১১টি বিদ্যালয় স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। অপরদিকে, সবুজবাগ, হাজারীবাগ, উত্তরা, কাফরুল, পল্লবী ও মোহাম্মদপুরে নির্মিত হচ্ছে কলেজগুলো। এগুলোর নির্মাণকাজও প্রায় শেষের দিকে। নির্মাণ কাজ যাতে আরো তাড়াতাড়ি শেষ হয় সেজন্য আজকের সভায় এ সংক্রান্ত একটি সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
অনুমোদিত এ প্রকল্পের নাম ‘ঢাকা মহানগরীতে ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ছয়টি মহাবিদ্যালয় (সরকারি) স্থাপন (২য় সংশোধিত)’। ২০১০ সালের একনেক সভায় এ প্রকল্পটি প্রথম অনুমোদিত হয়। তখন এর ব্যয় ধরা হয় ৪৩৫ কোটি টাকা।
পরবর্তীতে সরকারি জমি পাওয়ায় প্রকল্প থেকে জমি কেনা বাবদ ২০৪ কোটি টাকা বাদ দিয়ে ২৩১ কোটি টাকায় ২০১৩ সালে প্রকল্পটি প্রথম সংশোধিত আকারে অনুমোদিত হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একাডেমিক ভবন চার তালা থেকে ছয় তলায় সম্প্রসারণ, শহীদ মিনার স্থাপন,পর্যাপ্ত আসবাবপত্র সরবরাহ ও আইটি ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত হলে প্রকল্প ব্যয় ৬৪ কোটি টাকা বাড়িয়ে চূড়ান্তভাবে ২৯৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি আজকের একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে সংশোধিত এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি ২০১৬ সালের জুন নাগাদ শেষ হবে বলে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘হাজারীবাগ, উত্তরা, কাফরুলে যেসব কলেজ হচ্ছে, তার নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে ইতিমধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ বছর জুলাই থেকে মোহাম্মদপুর কলেজের কার্যক্রমও শুরু হবে। অপরদিকে, হাজারীবাগ, উত্তরা, রূপনগর, ডেমরায় স্কুল ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ মাস থেকেই কাফরুল, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও কামরাঙ্গীরচরে নির্মিত স্কুলগুলোতেও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।
স্বল্পমূল্যে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তি কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে ‘স্বল্পমূল্যে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তি উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)’ নামক আরো একটি সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন দেয় আজকের একনেক সভা।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ২৮ কোটি টাকায় এটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকৃত অর্থে, সোলার প্যানেলের গুণগত মান বজায় রাখতে একটি অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি তৈরিসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার জন্যই এ প্রকল্পটি সংশোধিত আকারে হাতে নেওয়া হলো।
সভায় আরো জানানো হয়, বর্তমানে প্রতি ইউনিট সৌর বিদ্যুতে খরচ হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা। কিন্তু বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ যে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে তাতে ইউনিটপ্রতি খরচ মাত্র ১২ টাকা ৩৮ পয়সা।
এ ছাড়া আজকের সভায় ‘সিরাজগঞ্জ-কাজিপুর-ধুনট সড়কে তিনটি পিসি গার্ডার ব্রিজ (শালুয়াঘাট, পাইকরতলি ও ঘোড়াচড়া) ও বিদ্যমান তিনটি বেইলি ব্রিজের সুপার স্ট্রাকচার (নইলসাপাড়া, ফকিরতলা ও সোনামুখী ) নির্মাণ (১ম সংশোধিত) ও ‘শ্রম ভবন’ নামক অপর দুটি প্রকল্পেরও অনুমোদন দেওয়া হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আজকের সভায় মন্ত্রিপরিষদের সদস্যগণসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই