ঢাকায় এসেছিলেন চে গুয়েভারা

১৯৫৯ সালে চে গুয়েভারা পূর্ব পাকিস্তানে এক গোপন সফরে এসেছিলেন। গোপন এ সফরে তিনি আদমজী পাটকলের ৩ নম্বর মিলের শ্রমিক-নেতাকর্মীদের সঙ্গে আধা ঘণ্টার এক অনির্ধারিত বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।

১৯৫৯ সালে কিউবার সামরিক একনায়ক বাতিস্তাকে সশস্ত্র লড়াইয়ে উত্খাতের মাধ্যমে কিউবা বিপ্লব সংঘটিত হয় অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে। আর তার সঙ্গী ছিলেন তখন আর্জেন্টিনার তরুণ ডাক্তার চে গুয়েভারা। বিপ্লব সম্পন্ন হওয়ার পর ফিদেল চে’কে বানদুং প্যাক্টে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোয় সফরে পাঠান। এ উদ্দেশ্যে ১৯৫৯ সালের ১২ জুন দীর্ঘ বিদেশ সফরে চে হাভানা ছাড়েন। সফরের অংশ হিসেবে জুনের শেষদিন চে ভারতে পৌঁছান। আসেন কলকাতায়ও। ভারত সফর শেষে চে গোপনে বাংলাদেশ (তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান) ঘুরে যান। চে’র বিভিন্ন জীবনীকারদের গ্রন্থ, বিদেশী সাংবাদিকদের অনুসরণ করে চে’র বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এর সূত্র ধরে অনুসন্ধান করতে বাংলাদেশেও মেলে চে’র বাংলাদেশ সফরের প্রমাণ। এ অঞ্চলের পাট নিয়ে চে’র আগ্রহ ছিল। কলকাতায় তিনি পাটকল পরিদর্শন করেছেন। তারই অংশ হিসেবে মূল পাট উত্পাদনকারী দেশ বাংলাদেশেও আসবেন— এ রকম ঘটাই স্বাভাবিক ছিল, তথ্য-বিশ্লেষণ করেও সে প্রমাণই মিলছে।

গোপনে ঢাকায় এসে চে ছদ্মবেশে তত্কালীন আদমজী জুট মিলের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ও সাধারণ শ্রমিকদের সঙ্গে মিলিত হন। পরে ১৯৭৫ সালে সেই ঘটনার স্মৃতি আমদজী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ছায়েদুল হক ছাদু বর্ণনা করেছেন তত্কালীন ৩ নম্বর মিলের কর্মকর্তা কেআর হাসানের কাছে।

এ সফরসহ পাশের দেশে চে’র আগমনের বিস্তারিত জানা যায় ভারতীয় সাংবাদিক ওম থানভির এক প্রতিবেদনেও। এ প্রতিবেদন প্রথম প্রকাশ হয় ডিসেম্বর ২০০৭ হিমাল সাউথ এশিয়ান পত্রিকায়। পাকিস্তানের ফ্রাইডে টাইমসও প্রকাশ করে ১৯৫৯ সালে আইয়ুব খানের সঙ্গে চে’র বৈঠকের এক ছবি।

চে’র ভারতবর্ষ সফরের উল্লেখ আছে হোর্হে কাস্তেনাদা রচিত চে-জীবনী ‘কম্পেনেরো: দ্য লাইফ অ্যান্ড ডেথ অব চে গুয়েভারা’ গ্রন্থেও। চে’র দ্বিতীয় স্ত্রী অ্যালেইদা মার্চও বিষাদ নিয়ে স্মরণ করেছেন সে স্মৃতি।

শুক্রবার বণিক বার্তার সাময়িকী সিল্করুটে থাকছে চে’র ঢাকা সফরের বিস্তারিত। সঙ্গে চে ভারতবর্ষ সফরের নিজের লেখা ও প্রামাণ্য ছবি।



মন্তব্য চালু নেই