ডুবে যাওয়া কার্গো উদ্ধারে তৎপরতা নেই

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে ভোলা নদীর ডুবোচরে আটকে ডুবে যাওয়া সার বোঝাই কার্গো এমভি জাভা লেমুর উদ্ধারে এখনো কাজ শুরু হয়নি। তবে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকসহ সুন্দরবন ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ঘটনা তদন্তে ও ক্ষতি নিরূপণে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কায় সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ শরণখোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

এদিকে এমওপি সার বোঝাই এই কার্গো নিমজ্জিত হওয়ায় ওই এলাকার নদীতে পরিবেশগত ক্ষয় ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ক্ষতির সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে ডুবোচরে আটকে পড়া কার্গোটি মালিকপক্ষ উদ্ধারের চেষ্টা করতে গেলে এর তলা ফেটে যায় এবং কাত হয়ে আংশিক নিমজ্জিত হয়। অন্তত ৩০০ টন এমওপি সার বোঝাই কার্গোটি গত ৩ মে মংলা থেকে ঢাকা যাবার পথে ডুবোচরে আটকে পড়ে।

এদিকে, মঙ্গলবার বিকেলে কার্গোটি উদ্ধারের চেষ্টার সময় আংশিক নিমজ্জিত হবার পর এর মালিকপক্ষের লোকেরা গা ঢাকা দিয়েছে। বুধবার তাদের ঐ কার্গোর আশেপাশে দেখা যায়নি।

অন্যদিকে, আজ (বুধবার) সকালে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মুহা. জাহাঙ্গীর আলম, সুন্দরবন বিভাগের বনসংরক্ষক ড. সুনীল কুমার কুন্ডুু, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমীর হুসাঈন চৌধুরী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জয়নুল আবেদীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ড. সুনীল পরে সাংবাদিকদের জানান, শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক কামাল উদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার শরণখোলা থানায় কার্গোডুবির ঘটনায় বনের পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তা ছাড়া সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমীর হুসাঈন চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, বনকর্মীরা অর্ধনিমজ্জিত ওই কার্গো থেকে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে বেশ কিছু সার অপসারণ করেছেন।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মুহা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. দিলীপ দত্ত বলেন, ‘এমওপি একটি রাসায়নিক সার। এটি পানিতে সহজে দ্রবীভূত হয়। বিপুল পরিমাণ এই সার একটি ছোট এলাকায় একসঙ্গে দ্রবীভূত হয়ে জলজ প্রাণসম্পদের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। সুন্দরবন একটি স্পর্শকাতর এলাকা। তাই বিষয়টি মাথায় রেখে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

তবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের বাগেরহাট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘এই সার কৃষি ও মৎস চাষে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। ফলে এই সার জলজ প্রাণীর জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে না।



মন্তব্য চালু নেই