ডিসিসিতে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী সালাম!

অবশেষে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছে বিএনপি। শুক্রবার সন্ধ্যায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার এ মনোভাব প্রকাশ করেন। তবে জোট শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে বিএনপির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিস) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার রাতে তিনি বলেছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত হলে তিনি ডিসিসি দক্ষিণের মেয়র পদে লড়তে চান।
তবে বিএনপির অনেক নেতা বলে আসছিলেন, মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলন যখন তুঙ্গে এমন সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সরকারের তোড়জোড় একটা ফাঁদ। আন্দোলন পণ্ড করার জন্যই এ নির্বাচন দেয়া হচ্ছে।
এমন সময়ে বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেয়া উচিৎ কি না- এমন প্রশ্নে আব্দুস সালাম বলেন, ‘উচিৎ কি না আমি কনফিউজড। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই।’
এর আগে ডিসিসি নির্বাচনের কথা উঠলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন মেয়র পদপ্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
কিন্তু পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকে যখন ডিসিসি নির্বাচনের তাগিদ দেন তখন বিএনপি একে তাদের জন্য ফাঁদ বলেই বর্ণনা করে। নেতারা তখন বলেন, তারা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন না।
অথচ গত বুধবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই নেতারা ইতিবাচক মনোভাব দেখান। যদিও বিএনপি বা শরিকদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য এখনো দেয়া হয়নি।
গত বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনও ডিসিসি নির্বাচনের ব্যাপারে ইতিবাচক বক্তব্য দেন।
সর্বশেষ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বেরিয়ে এসে খোদ জোট নেত্রীর নির্বাচনমুখি মনোভাবের কথা জানান।
এদিকে বিএনপির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এও জানা গেছে যে, বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তবে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলছেন, এ বিষয়ে দলের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এককভাবে নয় বরং দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
প্রসঙ্গত, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে ডিসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি সমর্থন দেবে বলে গুঞ্জন ছিল। তবে তাকে জেলে ভরানোর পর বিএনপির ডিসিসি নির্বাচনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি এবং বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা নাজমুল হুদা মেয়র পদপ্রার্থী হবেন এমন শোনা যাচ্ছে।
কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, নাজমুল হুদা বিএনপির সমর্থন পাওয়ার জন্য লবিং করছেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় আছেন তিনি। তবে এখনো পাননি।
এ ব্যাপারে বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা জোটগতভাবে মিটিং করে প্রার্থী দেব।’
উল্লেখ্য, এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সারা দেশেই বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট নেতারা ভালো করেছেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনেও বর্তমানে বিএনপি সমর্থিত মেয়র। এই আত্মবিশ্বাস থেকেই বিএনপি আসন্ন ডিসিসি ও চসিক নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা ভাবছে। যদিও প্রথম দিকে তারা নেতিবাচক মনোভাব দেখিছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই