টেন্ডারবাজিদের ধরবে ’র‌্যাব’

যারাই টেন্ডারবাজি করবে, সন্ত্রাস করবে তাদের র‌্যাব ধরবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন র‌্যাব-৭ এর পরিচালক লে. কর্নেল মিফতা উদ্দিন আহমেদ। পতেঙ্গার র‌্যাব সদর দপ্তরে বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ কথা জানান।

লে. কর্নেল মিফতা বলেন, টেন্ডারবাজ ও সন্ত্রাসীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। সিআরবিতে টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করা হবে। কারও রাজনৈতিক পরিচয় দেখে র‌্যাব অভিযান পরিচালনা করে না। র‌্যাবের কাছে কোনো অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় মুখ্য নয়। লিমনকে গ্রেফতারের পর কোনো চাপের মুখে পড়তে হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো চাপ ছিল না। র‌্যাব কখনো চাপের কাছে নতি শিকার করে নি। করবেও না। র‌্যাব কখনো কাউকে ছাড় দেয়নি। চাপ থাকলেও কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি জানান, সন্ত্রাস ও সংঘষের ঘটনার পর অস্ত্রসহ ছবি পত্রপত্রিকায় ছাপা হলে র‌্যাব অভিযান পরিচালনা করে সেগুলো উদ্ধার করবে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক সাইফুল আলম লিমনকে বুধবার রাত আটটার দিকে নগরীর লালখান বাজারের হাইওয়ে সোসাইটির ভূতাই কলোনির নিজ বাসা থেকে আটকের পর রাত সাড়ে নয়টায় র‌্যাব-৭ বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল। এর আগে ওই দিন সন্ধ্যা ৬টায় ওই বাসা থেকে লিমনকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠে।

এ সময় লিমনসহ আরও তিনজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন লিমনের গাড়ি চালক সাদ্দাম হোসেন, সহযোগী আজিজুল হক ও তৌহিদুল ইসলাম। উদ্ধার করা হয় তিনটি ওয়ান শ্যুটার গান, একটা বিদেশি পিস্তল, সাত রাউন্ড গুলি এবং চারটি ম্যাগজিন। এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় লিমনকে আটকের নিন্দা জানিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর টিপু। সাইফুল আলম লিমন সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে পরিচিত।

রেলওয়ের দরপত্র নিয়ে সংঘাত এবং খুনোখুনির ঘটনায় গত তিন বছর ধরে চট্টগ্রামে লিমনের নাম আলোচিত হয়ে আসছে। ২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি সিআরবিতে লিমন গ্রুপের সঙ্গে তার বিরোধী গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়। এতে নিহত হন যুবলীগ কর্মী সাজু পালিত (২৮) ও আট বছরের শিশু আরমান। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় লিমনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে লিমন ফের সিআরবিতে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালান।

সম্প্রতি তার বাহিনীর সঙ্গে প্রতিপক্ষ গ্রুপের কয়েক দফা রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয় যা থামাতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি’র সমন্বয়ে যৌথবাহিনীকে পর্যন্ত অভিযানে নামতে হয়। এর মধ্যে সোমবার (২৩ নভেম্বর) সিআরবিতে সংঘাতে দু’জন নিহতের মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় তদন্তকারী সংস্থা নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এতে লিমনকে প্রধান আসামি করা হয়।

জাড়া খুনের পর ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন সাইফুল আলম লিমন। তার বহিষ্কারাদেশ আর প্রত্যাহার করা হয়নি। লিমনের জন্য প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো চবি ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুও জোড়া খুনের মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। ঘটনার পর তাকেও গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।



মন্তব্য চালু নেই