ঝিনাইদহের কিছু খবর :

ঝিনাইদহে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ জেনারেল ক্লিনিকে ডাক্তার ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু অভিযোগ ওঠেছে। প্রত্যক্ষদর্শী জানান,

আজ বিকাল ৫ টার সময ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিমতলাবাসষ্ঠান অবস্তিত জেনারেল ক্লিনিকে উপজেলার চাপালী গ্রামের ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন স্ত্রী সীমাবেগম সন্তান প্রসবের জন্য ভর্তি হয় এ সময় ক্লিনিক মালিক মিজানুর রহমান ও ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম নিজে ভুল পরীক্ষানীরীক্ষা করে রোগীনীকে সিজার করতে বলেন এসময় যশোর থেকে আগত ডাঃ নিকুজ্ঞ বিহারী গোলদার রোগীনীকে মেয়াদ উর্ত্তীণ ইনজেকসন পুস করে এবং অপারেশন থিয়েটর থেকে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে নবজাতক মৃত্যুবরন করে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

এ সময় স্থানীয় জনতা ক্লিনিক মালিক ও ডাক্তারকে আটক করে ক্লিনিক ঘেরাও করে পরে কালীগঞ্জ থানার এস আই মনিরহোসেন নেতৃত্বে পুলিশ পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রে আনে। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বড় ভাইকে না পেয়ে, ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার
বড় ভাই সোহেল রানা অবরোধের সমর্থনে মিছিলে ছিলেন—এই অভিযোগে তাঁকে ধরতে বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। কিন্তু তাঁকে না পেয়ে ছোট ভাই জুয়েল রানাকে (২০) গ্রেপ্তার করে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপালী গ্রামে গত শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।জুয়েল রানার মা ফাহিমা খাতুন বলেন, শনিবার রাতে কালীগঞ্জ থানার পুলিশ তাঁর বাড়িতে এসে সোহেল রানার খোঁজ করে। তারা জানায়, সোহেল রানা বিএনপির মিছিলে গিয়েছিল। এরপর পুলিশ ঘরে ঢুকে সোহেলকে খুঁজতে থাকে। না পেয়ে একপর্যায়ে জুয়েলকে ধরে নিয়ে যায়। রোববার সকালে বিষয়টি পুলিশকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা বুঝতে চায়নি।

দুপুরে জুয়েলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।ফাহিমা খাতুন জানান, তাঁর দুই ছেলের মধ্যে সোহেল রানা দু-এক দিন আগে মিছিল-সমাবেশ করেছিলেন। তবে জুয়েল কখনো এগুলো করেন না। আট বছর আগে তাঁদের বাবা (ফাহিমার স্বামী) মারা গেছেন। এর পর থেকে ছেলেরা পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করে সংসার চালিয়েছেন। সোহেল স্নাতক (সম্মান) পর্যন্ত পড়ে কালীগঞ্জ শহরের রেজিস্ট্রি অফিসে এক মুহুরির সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। জুয়েলও বিএ পর্যন্ত পড়েছে বর্তমানে বিদ্যুৎমিস্ত্রির কাজ করেন।

দুজনের আয়ে চলে তাঁদের সংসার।কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, নাশকতার অভিযোগে জুয়েলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বড় ভাইকে ধরতে গিয়ে ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এমন কোনো বিষয় তাঁর জানা নেই।অবরোধের সমর্থনে কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল ইসলামের নেতৃত্বে শনিবার শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়।

এরপর রাতে একাধিক নেতা-কর্মীর বাড়িতে পুলিশ হানা দিয়ে জুয়েল রানাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। অন্য তিনজন হলেন একরাম হোসেন, জাহিদুল ইসলাম ও মুরাদ হোসেন।

 

 

ঝিনাইদহে নিহত পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর মাগুরায় সংবাদ সম্মেলন
ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেনের অর্থ সম্পদ আত্মসাত চেষ্টাকারীদের নানা ষড়যন্ত্র ও হামলার ভয়ে শিশুকন্যা সহ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন হতভাগ্য স্ত্রী বনানী। নিহত আকরামের স্ত্রী বনানী বিনতে বশির শনিবার মাগুরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে বনানী জানান, ঝিনাইদহ জেলা সদরের বাসিন্দা আকরাম হোসেন ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে এবং তার ৫ বোন রয়েছে। বনানীর বাবার বাড়িও একই শহরে। ২০০৬ সালে বনানীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে এসআই আকরামের বিয়ে হয়। আকরাম জাতিসংঘ মিশনে সাউথ সুদানে চাকরি করেছেন। সেখান থেকে ফিরে ঢাকা মগবাজারে একটি ফ্ল্যাট কেনেন। ওই ফ্ল্যাটেই স্ত্রী বনানী ও ৭ বছরের কন্যা আনিশাকে নিয়ে আকরাম বসবাস করতেন। এ সময় তিনি ঢাকার সিটি এস বি’তে চাকরি করতেন। SI

সম্প্রতি আকরাম তার শিশু কন্যা আনিশাকে রেজিস্ট্রি দানপত্র করে ফ্ল্যাটটি দিয়ে দেন। ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে তিনি মোটরসাইকেলে ঢাকা থেকে যমুনা সেতু হয়ে ঝিনাইদহের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। পথে ঝিনাইদহের বড়দিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন আকরাম। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় স্ত্রী বনানী শৈলকুপা থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, ঢাকায় চিকিৎসার সময় পুলিশের পক্ষ থেকে স্ত্রী বনানীর হাতে এক লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা দেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত আকরামের ভগ্নিপতি জে.এম রশিদুল আলম তখনই জোরপূর্বক ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নেন। আকরামকে অবরোধের মধ্যেই পুলিশের সহযোগিতায় ঝিনাইদহের বাড়িতে এনে দাফন করা হয়।এরপর থেকে আকরামের ভগ্নিপতি রশিদুল আলমের নেতৃত্বে ৫ বোন ঢাকার ফ্ল্যাট, ঝিনাইদহের বাড়ি ও অর্থ কড়ি আত্মসাতের জন্য স্ত্রী বনানী ও বনানীর বাবা-মা আত্মীয় স্বজনদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। তাই ঝিনাইদহ থেকে পালিয়ে তার বাবার কর্মস্থল মাগুরার মহম্মাদপুর উপজেলায় গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানা পুলিশ সড়ক দুর্ঘটনার বিষয় নিশ্চিত হয়েছে। তারপরও চাপ সৃষ্টি ও হয়রানির জন্য বনানী ও তার বাবা-মা, ভাইদের বিরুদ্ধে আকরামের বোন জান্নাতআরা পারভীন মিথ্যা খুনের মামলা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আকরামের স্ত্রী বনানী শিশু কন্যা আনিশা, শ্বশুর বশির ও খালা শ্বশুর আব্দুল ওয়াদুদ উপস্থিত ছিলেন।বনানীর বিরুদ্ধে মামলাকারী ননদ জান্নাত আরা পারভীন ফোনে জানান, তারা সন্দেহ করছেন যে তার ভাইকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্যই তিনি আদালতে মামলা করেছেন। আকরামের লাশ ময়নাতদন্ত করলেই সত্য বেরিয়ে আসবে। হয়রানি ও হুমকি ধমকির ঘটনা সত্য নয়।

 

ঝিনাইদহের মহেশপুের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৬ লাখ টাকার চাল আত্মসাতের অভিযোগ
ঝিনাইদহের মহেশপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টিআর প্রকল্পের ৬ লাখ টাকার চাল গোপনে উঠিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ। বরাদ্দ পেয়ে বাস্তবায়ন দেখিয়ে মাষ্টাররোল দাখিলের এক বছর পর বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানতে পারলেন তাদের প্রতিষ্ঠানে টিআর প্রকল্পের সাড়ে ৬ লাখ টাকার চাল বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।

যা অত্যন্ত গোপনে উত্তোলন করে বিক্রির মাধ্যমে টাকা আত্মসাত করেছেন প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম। তিনি নিজে প্রকল্পের সভাপতি হয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট, চেয়ার-টেবিল তৈরী, সংষ্কার ও জানালা-দরজা তৈরীর জন্য বরাদ্দ এই চাল বিক্রির টাকা পকেটস্থ করেছেন।জহুরুল ইসলাম ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মহেশপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি দাবি করেছেন সাবেক প্রধান শিক্ষক খায়রুল আনাম কিছু কাজ করে টাকা বাকি রেখে গিয়েছিলেন। যে টাকা তাকে পরিশোধ করতে হয়েছে। এই বরাদ্দ থেকে সেই টাকা পরিশোধ করেছেন। তবে খায়রুল আনাম কোনো কাজ করিয়ে টাকা বাকি রেখে আসেননি বলে জানিয়েছেন। তিনি যে কাজ করেছেন তা সবই বিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে করেছেন।

মহেশপুর উপজেলা প্রকল্প অফিস সুত্রে জানা যায়, ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে এক বরাদ্ধ পত্রে চারটি প্রকল্প দেখিয়ে ২০ মেঃ টন চাল বরাদ্দ দেন সাবেক সাংসদ শফিকুল আজম খাঁন চঞ্চল। ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসের দিকে ০১, ২৩, ৪৩ আর ৯০ নং প্রকল্পে এই বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি বরাদ্দে ছিল ৫ মেঃ টন করে চাল। আর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সবগুলোর সভাপতি হন প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম নিজেই। পরে এই চাল উঠিয়ে বিক্রি করেন প্রধান শিক্ষক। যার কোনো খবরই পাননি বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা।একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মহেশপুর উপজেলা শহরের প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মহেশপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

এখানে ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন ২৯ জন। এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছে নানা সমস্যা। তার মধ্যে চেয়ার-টেবিল আর বেঞ্চ সংকট রয়েছে। এ সকল কাজের জন্য তারা সাবেক সাংসদ শফিকুল আজম খাঁন এর সাথে প্রায়ই যোগাযোগ রক্ষা করতেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ২০ মেঃ টন চাল বরাদ্দ দেন। কিন্তু তারা এই বরাদ্দের পর আর কিছুই জানতে পারেননি। প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম গোপনে মাল তুলে বিক্রি করে আত্মসাত করেছেন।

বিদ্যালয়ের কোনো কাজ করেননি। এই বরাদ্দের টাকায় করা হয়নি চেয়ার-বেঞ্চ তৈরী, হয়নি ভবন সংষ্কার। মাঠের মাটি ভরাটও করা হয়েছে বিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে। শিক্ষকরা আরো জানান, কাজ না হওয়ায় তারা এতোদিন ভেবেছেন সাংসদ কোনো বরাদ্ধ দেননি। কিন্তু অতি সম্প্রতি বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। তারা কাগজপত্র যাচাই করে দেখতে পান একই সময়ে চারটি প্রকল্পে ২০ মেঃ টন বরাদ্দ রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলামকে অন্য শিক্ষকরা জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তার দিতে বাধ্য নন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

শিক্ষকরা জানান, এই বরাদ্দ পাওয়ার পর বিদ্যালয় থেকে কমিটি গঠনের মাধ্যমে সেই অর্থ খরচ করার কথা। কিন্তু তার কিছুই করা হয়নি।মহেশপুর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা শুভাগত বিশ্বাস জানান, ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে এই চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে মর্মে মাষ্টাররোল দাখিল করা হয়েছে। কাজ হয়েছে কিনা তিনি বিষয়টি বলতে পারেন না। তার যোগদানের পূর্বে এই প্রকল্প চারটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতে গেলে অনেক কিছু করতে হয়। এই বরাদ্দের টাকাও তিনি প্রয়োজন মতো খরচ করেছেন। কোনো টাকা আত্মসাত করেননি। বিষয়টি গোপনে হয়েছে কথাটিও টিক নয় বলে দাবি করেন।



মন্তব্য চালু নেই