জেনে নিন, বেয়ার গ্রিলসের চমকপ্রদ ২৪ অজানা তথ্য

ডিসকভারি চ্যানেলের জনপ্রিয় টিভি সিরিজ Man vs Wild–এর উপস্থাপক বেয়ার গ্রিলসকে (Bear Grylls) চেনে না এমন মানুষ বোধহয় খুব কমই আছেন। বেয়ার গ্রিলস একাধারে একজন ব্রিটিশ অভিযাত্রী, লেখক এবং টেলিভিশন উপস্থাপক।

১৯৭৪ সালে তিনি ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। বিপন্ন পরিবেশে টিকে থাকা নিয়ে বেয়ার গ্রিলসের বেশ কিছু টিভি শো আছে ইংল্যান্ড এবং আমেরিকাতে। প্রতিকূল পরিবেশে তার বেঁচে থাকার সংগ্রাম আর তার বিদঘুটে খাবার খাওয়ার জন্যও তিনি বেশ জনপ্রিয়।

চলুন জেনে নেয়া যাক এই দুঃসাহসী উপস্থাপক সর্ম্পকে কিছু চমকপ্রদ তথ্য-

১. ১৯৯৮ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন বেয়ার গ্রিলস। সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে এভারেস্ট জয় করার কারণেই তার খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। গিনেস বুকে তার নামও উঠে যায়। অবশ্য তার এই রেকর্ড এই পর্যন্ত ৪ বার ভাঙা হয়েছে।

২. মজার বিষয় হচ্ছে বেয়ার গ্রিলসের আসল নাম কিন্তু বেয়ার নয়। তার আসল না এডওয়ার্ড মাইকেল গ্রিলস।

৩. তার একমাত্র বোন লারা তাকে নামে ‘বেয়ার’ ডাকতে শুরু করেন যখন তার বয়স মাত্র ১ সপ্তাহ।

৪. বেয়ার কারাতে খেলায় ব্ল্যাক বেল্ট প্রাপ্ত।

৫. ব্রিটিশ স্পেশাল এয়ার সার্ভিসে ৩ বছর কাজ করেছেন তিনি।

৬. এই স্পেশাল এয়ার সার্ভিসে থেকেই তিনি কীভাবে প্যারাসুট থেকে লাফ দিতে হবে, পানিতে ডাইভ দিতে হবে, জঙ্গলে বেঁচে থাকেতে হবে, খালি হাতে মারামারি করতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে ট্রেনিং পান।

৭. এভারেস্ট জয় করার মাত্র ১ বছর আগে বেয়ার প্যারাসুট নিয়ে লাফ দিতে গিয়ে একটি দুর্ঘটনায় পড়েন। এই ঘটনায় তার মেরুদণ্ডের ৩টি হাড় ভেঙে যায়।

৮. বেয়ার গ্রিলস বইও লিখেছেন। ‘ফেসিং আপ’ নামে তার বইটি ব্রিটেনে সেরা দশ বেস্টসেলার বইয়ের তালিকায় ছিল। পরবর্তীতে আমেরিকায় বইটি The kid who climbed Mount Everest নামে প্রকাশিত হয়।

৯. বেয়ার মোট ১১টি বই লিখেছেন। এর মধ্যে বাচ্চাদের জন্য ৪টি কল্পকাহিনীর বই রয়েছে।

১০. তার মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের ঘটনা নিয়ে একটি ডিওডোরেন্ট কোম্পানি তাকে নিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করলে তিনি সর্বপ্রথম টিভিতে আসেন।

১১. তার প্রথম টিভি শো ছিল চ্যানেল ফোর-এ। নাম ছিল ‘এসকেপ টু দ্য লিজিয়ন’।

১২. এরপরেই তিনি ডিসকভারি চ্যানেলে ‘Man vs Wild’ নামে একটি টিভি শো করেন যেখানে ১ ঘণ্টার ১২টি পর্ব ছিল।

১৩. ‘Man vs Wild’ আমেরিকার ১ নম্বর টিভি শো হিসেবে জায়গা করে নেয়। সারা পৃথিবীর ২০০টি দেশে ১.২ বিলিয়ন দর্শক হয় এর।

১৪. ২০০৭ সালে তিনি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে একটি শক্তিচালিত প্যারাগ্লাইডারে করে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ার উপরে উড্ডয়ন করেন। তার এই প্রচেষ্টা ২.৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান যোগাড় করে।

১৫. ডিসকভারি চ্যানেলের সাথে তিনি ‘Man vs Wild’ নামে একটি এক্সবক্স, প্লেস্টেশন এবং উইই গেম প্রকাশ করেন।

১৬. ২০০৭ সালে গুজব ছড়ায় যে বেয়ার গ্রিলস এবং তার দলের অন্যান্য সদস্যরা জঙ্গলে তাঁবু খাঁটিয়ে থাকার বদলে হোটেলে বিলাসবহুলভাবে থাকে। কিছুদিন বন্ধ থাকলেও এই শো আবার ফিরে আসে এবং বিজ্ঞপ্তি দেয়, ‘বেয়ার গ্রিলস এবং তার সঙ্গীরা জীবনের জন্য হুমকি এমন যে কোন অবস্থায় বাইরের সাহায্য নিয়ে থাকে’।

১৭. গ্রিলস তার শোয়ের অংশ হিসেবে অনেক বিদঘুটে জিনিস খেয়েছেন যেমন- তিব্বতের চমরী গাইয়ের জমে যাওয়া চোখ, উটের পাকস্থলীর রস, জ্যান্ত সাপ, হাতের সমান বড় পোকার ডিম, বিশাল সাইজের জ্যান্ত মাকড়সা।

১৮. ছোটবেলায় তার প্রিয় টিভি শো ছিল ম্যাকগাইভার।

১৯. ২০০৯ সালে ৩৫ বছর বয়সে পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ চিফ স্কাউট হিসেবে তিনি স্কাউট এ্যাসোসিয়েশনে নিযুক্ত হন।

২০. দুর্ঘটনায় পড়ে গ্রিলস শারীরিকভাবে সে সব আঘাত পেয়েছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কাঁধ ভেঙে যাওয়া, আঙুল কেটে যাওয়া, কনুই ভেঙে যাওয়া, হাঁটুর কার্টিলেজ ভেঙে যাওয়া, কোমরের হাড় সরে যাওয়া ইত্যাদি। এছাড়া কত অজস্রবার যে তিনি সাপ, বিছা আর মাকড়সার কামড় খেয়েছেন তার কোন হিসেব নেই।

২১. তবে এতো কিছু করার পরেও বেয়ার পড়াশোনাটা কিন্তু ঠিকভাবেই করেছেন। ব্রিটেনের নামকরা ‘এটন’ কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি।

২২. ১৯৯৭ সালে তিনি সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে হিমালয়ের আমা দাবলাম শৃঙ্গে চড়েন। উল্লেখ্য এই শৃঙ্গকে এডমুন্ড হিলারি ‘আনক্লাইম্বেবল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।

২৩. মাউন্ট এভারেস্টে জয় করতে তার সময় লেগেছিল মাত্র ৯০ দিন।

২৪. বেয়ার গ্রিলস বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে। তার ছেলেও হয়েছে বাবার মতন। মাত্র ৭ বছর বয়সে সে সুইমিং পুলে ডুবতে বসা একটি মেয়েকে উদ্ধার করে।



মন্তব্য চালু নেই