জেনে নিন : ফিল্মমেকিং-এ কেরিয়ার ও ডিজিটাল ক্যমেরা সম্পর্কে
এম এ শিমুল : ফিল্মমেকিং কেরিয়ার হিসেবে একটু অফবিট শোনালেও আজকাল এই কেরিয়ারের বাজার কিন্তু বেশ হিট। যদি মনে হয় তোমার মধ্যে আছে ক্রিয়েটিভিটি আর সাধারণ গল্পকেও অসাধারণ করে তুলে ধরার ক্ষমতা, তা হলে চট করে মাথায় পড়ে ফেলতেই পার ডিরেক্টরস্ হ্যাট। অনেকেরই ধারণা থাকে যে, ডিরেক্টরের কাজ শুধুমাত্র শুটিং করানো। ধারণাটা এক্কেবারে ভুল। ছবির গল্প নির্বাচন করা থেকে কাস্টিং, এডিটিং, স্ক্রিনিং অবধি পুরো ব্যাপারটা তদারকির ভার থাকে ফিল্মমেকারদের উপর। তাই বলাই যায় যে, একটি ছবির প্রায় এ টু জ়েডই দেখাশোনা করতে হয় ফিল্মমেকারদের।
কাজের ধরনঃ- স্ক্রিপ্টরাইটারের লেখা গল্পটাকে অভিনেতাদের মাধ্যমে পরদায় ফুটিয়ে তোলার সম্পূর্ণ দায়ভারই থাকে ফিল্মমেকারের কাঁধে। স্ক্রিপ্টের কোন চরিত্রের জন্য কোন অভিনেতাকে সবচেয়ে ভাল মানাবে তা কাস্টিং ডিরেক্টর ঠিক করলেও ফিল্মমেকারের মতামতও এ বিষয়ে সমান গুরুত্বপূর্ণ। আর্টিস্টিক দিকগুলোর পাশাপাশি টেকনিক্যাল দিকগুলোও থাকে ফিল্মমেকারের তত্ত্বাবধানে। যদিও ক্যামেরার পিছনে অভিনেতাদের ডিরেকশন দেওয়া হল একজন ডিরেক্টরের প্রধান কাজ।
পাশাপাশি শুটিং শেষে এডিটরের সঙ্গে বসে কেঁটে-ছেটে সম্পূর্ণ ছবিটার ফাইনাল কপি তৈরি করাও ফিল্মমেকারের দায়িত্ব। মিউজ়িক ডিরেক্টরের সঙ্গে বসে ছবির গান থেকে শুরু করে ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ও থিম মিউজ়িকও ফাইনালি অ্যাপ্রুভ করার ভার রয়েছে ফিল্মমেকারের হাতে। লোকেশন থেকে শুরু করে ইনডোর সেট সবকিছু কোন সিনের জন্য কেমন হবে সে বিষয়ে ফাইনাল ডিসিশনটা থাকে ফিল্মমেকারের হাতেই। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে, ফিল্মমেকারদের কিন্তু কোনও তথাকথিত ‘ডিউটি আওয়ারস’ নেই।
কাজের সুযোগঃ- শুরুতে কোনও সিনিয়ার ফিল্মমেকারকে অ্যাসিস্ট করা যেতে পারে। আস্তে-আস্তে নিজের কার্যক্ষমতা, জ্ঞান আর বিশেষ করে কনট্যাক্ট বাড়লে স্বনির্ভরভাবে কাজ করা যায়। বিভিন্ন প্রডাকশন হাউসগুলিতে বিভিন্নসময় ফিল্মমেকারদের হায়ার করা হয়। ফিল্মমেকাররা বিশেষত কনট্র্যাক্ট বেসিসে কাজ করে থাকেন। ফ্রিল্যান্স ডিরেক্টর হিসেবেও কাজ করা যায়।
এবার ডিজিটাল ক্যমেরার বিস্তারিতঃ- ডিজিটাল ক্যামেরা বলতে এমন ক্যামেরা বোঝায়, যেগুলোতে সনাতনী ফিল্ম ব্যবহৃত হয় না, বরং তার বদলে মেমরী চিপের মধ্যে ছবি ধারণ করে রাখার ব্যবস্থা থাকে। ডিজিটাল ক্যামেরার মান হিসাব করা হয় মেগা পিক্সেল দিয়ে: যত বেশি মেগা পিক্সেল তত বেশি বড় ছবি ধারণ করার ক্ষমতা। প্রথমে দাম বেশি থাকলেও ফিল্ম ক্যামেরা থেকে অনেক দ্রুত দাম কমছে, এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ফিল্ম লাগেনা এবং সাথে সাথে স্ক্রিনে ছবি দেখা যায় বলে এর চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়ছে। নিকট ভবিষ্যতে এটি ফিল্ম ক্যামেরাকে জাদুঘরের পণ্যে পরিণত করতে পারে। Resolution (MP) কোন ডিজিটাল ক্যমেরার রেসুলেশন কত মেগাপিক্সেল তা দিয়ে ঐ ক্যামেরার সেনসরের ক্ষমতাকেই বুঝায়। যত বেশি মেগাপিক্সেল তত বড় প্রিন্ট আউট নেয়া যাবে ছবির মান অক্ষুন্ন রেখেই।
ইদানীং অনেকে এই মেগাপিক্সেলকে ক্যামেরার স্ট্যাটাস সিম্বল মনে করে ! পোস্টকার্ড সাইজ ফটো হচ্ছে 6″x4″। ব্যতিক্রমধর্মী প্রয়োজন ছাড়া এর থেকে বড় প্রিন্ট কেউ করে না। 7″x5″ ফটো কোয়ালিটি প্রিন্টের জন্য ৩ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাই যথেষ্ট! Sensor Type ইমেজ সেনসরের ওপর তোলা ছবির মান নির্ভর করে। এই সেনসর ২৫ এমএম২ থেকে ২০০০ এমএম২ মানের হয়ে থাকে। থাকে। ইমেজ সেনসরের আকার যত বড় হবে, ছবির মান তত ভালো হবে। ডিজিটাল ক্যামেরার সাধারণত দুই ধরনের ইমেজ সেনসর দেখা যায়। একটি সিসিডি (Charge Couple Device) ও অপরটি সিএমওএস (Complementary Metal Oxide Semiconductor)। সিএমওএস সেনসর সাধারণত কম ব্যাটারি খরচ করায়। এর গতিও সিসিডির চেয়ে অনেক বেশি। Lens লেনস ডিজিটাল ক্যামেরার গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস। Nikkon, Canon, Olympus কোম্পানীগুলো নিজেরাই লেন্স প্রস্তুত করে, আবার Sony, Casio, Panasonic কোম্পানীগুলো থার্ড পার্টির লেন্স ব্যবহার করে। Display (Inch) সাধারনত 2.5- to 3-inch হয়ে থাকে। Optical Zoom (X) অপটিক্যাল জুম করার ক্ষেত্রে ক্যামেরা ব্যবহার করে লেন্স। অর্থাৎ লেন্সের সাহায্যে বস্তুকে ছোটবড় করবে যেখানে ছবির কোয়ালিটি একই থাকবে। Digital Zoom (X) ডিজিটাল জুমের সাথে বস্তু বা লেন্সের কোন সম্পর্ক নেই।
এখানে ডিজিটাল প্রসেসে ছবির কোন অংশকে বড় করে দেখানো হয় এবং ছবির কোয়ালিটি হ্রাস পায়। ক্যমেরার ডিজিটাল জুম দেখে প্ররোচিত হবেন না, লক্ষ্য করবেন অপটিক্যাল জুম ক্ষমতা কত। যত বেশি জুম থাকবে তত বেশি দুরত্বের ছবি তোলা যাবে। Shutter Speed (sec) লেন্স ও সেনসরের মাঝখানে আলো ঠেকানোর আবরণকে বলে শাটার। এটি আলো আটকে রাখার কাজ করে। লেন্সের মধ্য দিয়ে আসা আলো সেনসরে প্রবেশের জন্য এটি খুলে দিতে হয়। ছবি তোলার সময় অর্থাৎ Shutter release button চাপার সাথে সাথে এই শাটার অল্পক্ষণের জন্য খুলে আবার বন্ধ হয়ে যায়। শাটার স্পিড হচ্ছে লেন্স ও সেনসরের মাঝখানে আলো ঠেকানোর আবরণটি (শাটার) খুলে যাওয়া এবং বন্ধ হয়ে যাওয়ার টাইম গ্যাপ। অর্থাৎ আবরণটি কতক্ষণ খোলা থাকবে তা নিয়ন্ত্রণ করা। সাধারনত এই সময়টি এক সেকেন্ডেরও কম হয়, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশিও হতে পারে। শাটার স্পিডকে 1/90, 1/125, 1/250, 1/500, 1/1000, 1/1500 সেকেন্ড হিসেবে প্রকাশ করা হয়। রাতের ও দিনের ছবির জন্য Aperture ও Shutter Speed ভিন্ন রকমের হয়। Face Detection ডিজিটাল ক্যামেরায় ফেস ডিটেকশান টেকনোলজির ক্ষেত্রে আপনি ম্যানুয়ালি ক্যামেরার তোলা ছবির প্রিভিউ অপশন থেকে ফেস ডিটেক্ট করে তাতে আপনার মন মত ইফেক্ট এবং ফিনিশিং টাচ দিতে পারবেন। ফেস ডিটেকশান টেকনোলজি ফেসকে ডিটেক্ট করা ছাড়াও ডিজিটাল ক্যামেরায় আরো যে সকল সুবিধা যোগ করে দিয়েছে তা হলো ফোকাস, এক্সপোজার, হেয়াইট ব্যালান্স, রেড আই ডিটেকসন, ফোকাস, ট্রিমিং এর মত সুক্ষ কাজ যা ক্যামেরার ব্যবহার কে আরও সহজ করে তুলেছে। Red-Eye Reduction মানুষ বা জীব-জন্তুর ছবিতে অনেকসময় দেখা যায় চোখের রেটিনা লাল বর্ণের হয়ে গেছে।
শটের সময় ফ্লাশের আলো সামান্য কোণ সৃষ্টি করে লেন্সে ফিরে আসে। চোখের রেটিনা হল আয়নার মত। কমপ্যাক্ট ক্যামেরায় ফ্লাশ লাইট ও লেন্সের অবস্থান খুবই কাছাকাছি। পোট্রেইট বা ক্লোজ-আপ শট নেওয়ার সময় ফ্লাশ লাইটের আলো যখন রেটিনা থেকে প্রতিফলিত হয়ে সোজাসুজি লেন্সে চলে আসে তখনই রেটিনার ছবি লাল হয়। এই সমস্যাকে এড়ানোর জন্য Red-Eye Reduction Flash Mode Sweep Panorama কেবল আলতো বোতামের চাপে বিস্ত্রিত পরিসরে এবং সুইপ প্যানোরামিক ছবি তৈরি করুন। পুরু ছবিটি দেখার জন্য এবং তা গভির ভাবে বুঝার জন্য দরকের হবে পেনরামার। অবিশ্বাস্য দৃশ্য নির্মানের জন্য সুইপ প্যানোরামার কোন বিকল্প নেই। আর মজার বিষয় হচ্ছে যে, এর জন্য কোন প্রকার পিসি বা বিশেষ সফটওয়্যার দরকের হবেনা। এখন একটি মজার এবং সহজ উপায় দেখুন সুইপ প্যানোরামার মাধ্যমে আপনি কতটা মনের মত ছবি তৈরি করতে পেরেছেন। Internal Memory ডিজিটাল ক্যামেরার সাথে যে মেমোরি (12 MB – 32 MB) দেয়া হয় তা খুবই অল্প। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আলাদাভাবে মেমোরি কিনতে হয়।
সুতরাং ক্যামেরা কেনার আগে দেখা উচিত কোন ধরনের মেমোরি কার্ড কিনতে হবে। তার দাম কেমন ও সহজলভ্য কিনা। Memory Type উল্লেখযোগ্য মেমোরি কার্ড CompactFlash, Secure Digital, SDHC, xD Picture, Memory Stick, MicroDrive, and SmartMedia. তবে SD ও SDHC কার্ড হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ও সহজলভ্য কার্ড।সাধারণত 4GB মেমোরীতে 10MP ক্যামেরায় JFEG ফরমেটের প্রায় ১১৫০ টি ছবি ও 8 MP ক্যামেরায় ১৪৫০টি ছবি সেভ করা যায়। USB সব ক্যামেরার সাথে USB ক্যাবল থাকে। অনেক ক্যামেরার সাথে টিভি কানেকটিং কেবল থাকে যাতে ক্যামেরার ছবি সরাসরি টিভিতে দেখা যায়। Battery ডিজিটাল ক্যামেরার বহুমুখী ফাংশন ও এলসিডি ডিসপ্লের জন্য রিচার্জেবল ব্যাটারীর কোন বিকল্প নেই। সাধারণত ব্যাটারীর অপশন তিন রকমের হয়ে থাকে।
ক) Lithium Ion ব্যাটারী, এটি ক্যামেরার সাথেই থাকে এবং ক্যামেরাসহ চার্জ করতে হয়।
খ) চার্জারসহ Lithium Ion ব্যাটারী, পার্থক্য হচ্ছে আলাদা একটি চার্জার থাকে, ব্যাটারী ক্যামেরা থেকে বের করে এই চার্জারে রেখে চার্জ করতে হয়। সুবিধা হল, একটা এক্সট্রা ব্যাটারী কিনলে একটা স্ট্যান্ড বাই চার্জে রেখে আরেকটা দিয়ে ক্যামেরার কাজ চালানো যায়।
গ) Rechargeble AA NiMh (পেন্সিল ব্যাটারী)। এ অপশনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যাটারী ও চার্জার আলাদাভাবে নিজেকে কিনতে হয়। ব্যাটারীর চার্জের ক্ষমতা mAh বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন :
https://www.facebook.com/shimuladmedia?notif_t=page_new_likes&__mref=message_bubble
মন্তব্য চালু নেই