জেডিসি ফলপ্রতাশী ভ্যান চালক মাহবুর রহমান ও আমাদের লজ্জা
নুরুল আলম ডাকুয়া : গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের বজরা কঞ্চিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মকবুল হোসেনের ছেলে মাহবুর রহমান। সম্প্রতি অনুষ্ঠিতব্য জেডিসি পরীক্ষায় কঞ্চিবাড়ি মজিদা দাখিল মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষার্থী হিসাবে অংশ গ্রহণ করে।
সরেজমিনে দেখা যায় মাহবুর রহমান ২০১৬ ইং সালের জেডিসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করলেও অতি দূঃখ কষ্টে দিনানিপাত করছে তার পরিবার, অর্থ অভাবে বাবা মকবুল হোসেন বেছে নিয়েছেন বাজারে সবজি বিক্রির পেশা। ছোট বেলা থেকে মাহবুর রহমান লেখা পড়ায় বেশ আগ্রহী তাই বাবা মা কখনই তাকে লেখা পড়ার জন্য নিরুৎসায়ীত করেন নি কিন্তু দুঃখের সংসারে ছেলের লেখা পড়ার খরচ বা তেমন উৎসাহও জোগান নি। এমত অবস্থায় মাহবুর রহমান ছোট বেলা থেকে শিখেছে কষ্টের মাঝে থেকে লেখা পড়ার আনন্দ নেওয়ার। আমাদের প্রতিনিধির সাথে মাহবুর রহমানের দেখা হয় পথের মধ্যে এবং তার ভ্যানে বসেই কথা হলে সে জানায় “অভাবের সংসার আব্বা তো তরকারি বিক্রি করে, এ দিয়ে চলেনা তাই আমার তো এখন লেখা পড়া নাই, সামনে রেজাল্ট হলেই ভর্তি হতে হবে। ভাল পোশাক না হলে খুব খারাপ লাগবে, তাছাড়া ভর্তি ফি তো দিতে হবে তাই ভাড়ায় ভ্যান চালাচ্ছি।” পথে যেতে যেতে কথা হয় মাহবুর রহমানের সাথে- মাহবুর রহমান কাঁন্না জনিত কন্ঠে জানান জেডিসি পরীক্ষার ফরম পূরনের টাকাসহ আনুসাঙ্গিক খরচ এর জন্য তাকে ভ্যান চালাতে হয়েছে।
কথা হতে হতে শেষ হয়ে আসে আমাদের প্রতিনিধির যাত্রাপথ, গন্তব্যে পৌছে তার পরিবার সম্পর্কে জানতে চাইলে সে জানায় বাবা মা ছাড়াও তার মাহিন নামে ১০ বছরে ছোট ভাই রয়েছে। বাবা একজন বাজারে মৌসুমী সবজি বিক্রেতা। জমিজমা বলতে শুধু ভিটা মাটি আছে। এসব কথা যেন নিবিঘেœ ছলছল চোখে বলে মিষ্টি হাসি দিল মাহবুর রহমান। আবারও বিরবির করে বলল সকল বন্ধুর মোবাইল রয়েছে। লেখা পড়া আজ তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর একটা মোবাইল ফোন দরকার।
এসময় জানতে চাওয়া হলো কত টাকা পাবে সে দিন শেষে, এবার যেন সে হতাশা ও ফ্যাকাসে হয়ে বলল সারা দিন শেষে ২০০ টাকা থাকে, ভ্যান ভাড়া দিতে হয় রাস্তায় ক্ষিদা লাগলে খাই সব মিলে ১৮০ থেকে ২০০ থাকে।
এবার বিদায় বেলায় তার একটি ছবি তুলতে চাইলে হাসি মুখে একটা ছবি উপহার দিল।
বাংলাদেশ স্বাধীন এদেশ আজো রয়েছে ক্ষুধা দারিদ্রতা শারিরিক অক্ষমতা নিয়ে জীবন যুদ্ধে ঠিকে থার জন্য সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার অপারময় প্রচেষ্টা।। সালাম তোমায় মাহবুর রহমান।
মন্তব্য চালু নেই