জবি শিক্ষার্থীদের সংকট হৃদয় দিয়ে বুঝুন
আরিফুল ইসলাম অনিক : একবার ভাবুনতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা কোথায় থাকে, কিভাবে থাকে? ঢাকায় বাড়ি ভাড়া বাবদ অর্থ জোগাতে যেখানে বিভিন্ন পেশার কর্মজীবীরাও হিমশিম খেয়ে উঠেন সেখানে ছাত্ররা কিভাবে তা ম্যানেজ করবে। বাড়ি ভাড়ার আধিক্য হেতু নানারকম রম্যশিল্প দেখতে দেখতে আমরা এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন আবাসিক হলের দাবিতে আন্দোলনরত তখনও আমরা বিষয়টাকে অসম্ভব কল্পনা ভেবে এক কথায় উড়িয়ে দিচ্ছি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র বাসাভাড়া বাবদ কত টাকা ব্যয় করেন সে হিসাবটা কষলেই মাথা থেকে একবেলা খাবারের পেছনে মাসিক খরচ হওয়া অঙ্কটা এমনিতেই চলে আসে। সারাদিন ক্লাস, পরীক্ষার পর ক্লান্ত শরীর নিয়ে পুরান ঢাকার ভয়াবহ বৈকালিক যানজট পেরিয়ে কত ছাত্র যে শহরতলীতে ছুটে চলে নিজ ঠিকানায়-গন্তব্যে তার ইয়ত্তা নেই। এতদূর যাওয়ার অর্থ প্রায়শই একটাই- ‘একটু কম ভাড়া সম্পন্ন আবাসন।’
নারী শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরও এক ধাপ বেশি। তার উপরে জঙ্গি ইস্যুতে মানুষ বিশ্বাস হারাচ্ছে মানুষের উপর। ব্যাচেলরদের বাসাভাড়া দিতে এমনিতেই অনিচ্ছুক থাকেন বাড়িওয়ালারা। বর্তমান সময়ের অবস্থা দাঁড়িয়েছে অনেকটা- এমনিতেই নাচুনে বুড়ি, তার উপরে ঢোলের বাড়ি’র মত।
দেশের অন্যতম ও জনাকীর্ণ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো আবাসিক হল নেই। আশ্চর্যজনক হলেও এখন পর্যন্ত এটাই কিন্তু নির্মম বাস্তবতা। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটির তো অনেকগুলো হল ছিল! এই প্রশ্নটা বারবার উঠে আসে। এই প্রশ্নের জবাবে রাঘব বোয়াল, দখলবাজসহ কটু বিশেষণযুক্ত কিছু চরিত্র গুরুত্বপূর্ণভাবে আসন দখল করে বাক্য সম্প্রসারণ করতে থাকে। জবির শিক্ষার্থীরা অনেক দিন ধরে হল নির্মাণের বা তাদের আগের হলগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করে আসছিলো। কিন্তু নির্বিকার, নির্ভাবনার প্রশাসন কিছুই দেখেননি, শুনেননি। এখন উনারা ধর্মঘটের মত কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
সারাদেশের শিক্ষার্থীদের অতি অবশ্যই নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে দেশে শিক্ষার পরিবেশ আরো সুন্দর, সহজ ও শান্তিময় করে তোলা।
মন্তব্য চালু নেই