জনগণের পকেট কেটে ঘাটতি পূরণ!

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অর্ধকে নেমে এলেও এখন পর্যন্ত ১ পয়সাও কমায়নি সরকার। কারণ বিভিন্ন খাতের ঘারতি পূরণ করতে জনগণের পকেটকেই বেছে নিয়েছে সরকার।

গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও স্থানীয় বাজারে কমেনি। তেলের দাম না কমানোর যুক্তি হিসেবে বার বার আগের ভর্তুকি কমিয়ে আনার কথা বলা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তেলের আগের ভর্তুকির টাকা উঠাতে চাচ্ছে সরকার। সাথে সরকারি চাকরির বেতন বাড়ানোসহ বাজেটে যে ঘাটতি আছে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও দেশের সাধারণ জনগণ এর কোন সুফল পাচ্ছে না।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের উপসচিব বলেন, আমরা চাইলে তেলের দাম কমাতে পারি, কারণ বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অনেক কম। কিন্তু আমদের আগের ভর্তুকির টাকা উঠাতে হবে। দেশে তেলের দাম কমলেও খুব বেশি কমানো সম্ভব হবে না, বিশ্ববাজারে যে কোন সময় তেলের দাম বাড়তে পারে।

বর্তমানে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রোল ৯৬ টাকা, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করলে অকটেন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেট্রোল ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, কেরোসিন ২২ থেকে ৩০ টাকা হওয়ার কথা।

এদিকে, সাম্প্রতিক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছেন, ফার্নেস তেলের মূল্য প্রতি লিটারে ১০-১৫ টাকা কমিয়েছি। পহেলা বৈশাখ থেকে ১০ দিনের মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এতে অকটেন ও পেট্রোলের দাম কমানো হবে ১০ থেকে ১৫ টাকা এবং ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমবে ৪ থেকে ৫ টাকা।

সরকারের জ্বালানি তেল আমদানি ও বিপণনকারী সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ এম বদরুদ্দোজা বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডটকমকে জানান, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায় গত দুই বছর থেকে সব ধরনের তেল বিক্রি করে মুনাফা করছে বিপিসি।

তিনি বলেন, গত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) বিপিসি পাঁচ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। আর চলতি অর্থবছরে (২০১৫-১৬) ৭ হাজার কোটি টাকা লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যেই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মুনাফা হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।

সূত্র জানায়, দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। যার প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয়। এ তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পরিবহন খাতে, ৪৫ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে ২৫ শতাংশ, কৃষি খাতে ১৯ শতাংশ, শিল্প খাতে ৪ শতাংশ এবং গৃহস্থালী ও অন্যান্য খাতে ৭ শতাংশ।



মন্তব্য চালু নেই