চাটখিলে প্রতারণার মাধ্যমে প্রবাসীর ১০লক্ষ টাকা আত্মসাৎ

ছয় বছরের সন্তান নিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে গৃহবধূ’র পলায়ন

নোয়াখালীর চাটখিল উপজলোয় স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ীর লোকজন প্রতারণার মাধ্যমে বাহারাইন প্রবাসী শাহ আলম তরুনের নগদ ৫ লক্ষ টাকা ও স্ত্রীকে বিয়ের সময় দেওয়া ১১ ভরি স্বর্ণালংকার সহ ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে নিয়ে গেছে। তার একমাত্র ছেলে হাসানকে (৬) জিম্মি করে রেখেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করলে ছেলে হাসানকে হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে। প্রবাসী শাহ আলাম তরুনের স্ত্রী ও চাটখিল উপজেলার ১নং শাহপুর ইউনিয়নের খালিশপাড়া গ্রামের আলী সর্দার বাড়ীর নুর ইসলাম প্রকাশ নবু মিয়ার মেয়ে কুলছুম বেগম প্রকাশ কুসুম (২৮), তার বাবা নবু মিয়া, মা খোতেজা বেগম, ভাই জাহাঙ্গীর, আলমগীর, খালতো ভাই সমুন সহ পবিবারের লোকজন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এসব ঘটনায় আতংকগ্রস্থ হয়ে প্রবাসী শাহ আলম তরুন মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে বর্তমানে বাহারাইনের সালমানিয়া হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভর্তি আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। ক্ষতিগ্রস্থ শাহ আলম প্রকাশ তরুন চাটখিল উপজেলার ৮নং নোয়াখলা ইউনিয়নের ঘাশিপুর গ্রামের মিয়াজান বেপারী বাড়ীর মৃত হাবিব উল্যার ছেলে। তিনি বাহারাইন প্রবাসী। হাসপাতাল থেকে মোবাইলে ফোনে প্রবাসী শাহ আলম তরুন বোনকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে বোন জানু বেগম নোয়াখালী পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তরুনের স্ত্রী কুসুম, তার ছেলে হাছানকে জীবিত উদ্ধার, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার এবং অভিযুক্তদের আইনের আওত্তায় নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোরালো দাবি জানানো হয়। লিখিত অভিযোগে একই উপজেলার ১নং শাহপুর ইউপি’র খালিশপাড়া এলাকার আলী সর্দার বাড়ীর বাসিন্দা ও শাহ আলম তরুনের স্ত্রী কুলছুম প্রকাশ কুসুম (২৮), শ্বশুর নবু মিয়া (৫০), শাশুড়ী খোতেজা বেগম (৪৫), শ্যালক জাহাঙ্গীর (২৪), আলমগীর (২২), খালতো শ্যালক সুমন ও অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগের আলোকে শাহ আলম তরুনের বোন জানু বেগম সাংবাদিকদের জানান, ৭ বছর পূর্বে আমার ভাই শাহ আলম তরুন একই উপজেলার খালিশপাড়া আলী সর্দার বাড়ীর নবু মিয়ার মেয়ে কুলছুমকে ইসলামী শরীয়তে কাবিন রেজিষ্ট্রির মাধ্যমে ও ১১ ভরি স্বর্ণালংকার দিয়ে বিয়ে করে। তাদের সংসারে রয়েছে একমাত্র ছেলে হাছান। বিয়ের পর আমার ভাই বাহারাইনে চলে যান। এরপর দুই বছর পূর্বে একবার দেশে এসে ঘুরে যান। তার স্ত্রী কুসুম, ছেলে হাছান ও আমার বৃদ্ধা মাতাকে নিয়ে আমার ভাইয়ের ঘরেই বসবাস করে আসছিল। কিন্তু এর মাঝে কুসুমের বাবা নবু মিয়া ও তার ভাইয়েরা তার সাথে দেখা করতে এসে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে নেওয়ার কথা বলে স্বামীর বাড়ী থেকে নিজেদের বাড়ীতে নিয়ে যায়। আমার ভাইয়ের পাঠানো টাকা আত্মসাৎ করার জন্য। পরধন লোভী, প্রতারক, বিশ্বাসঘাতক শ্বশুর, শ্বাশুড়ী, দুই শ্যালক, খালাতো শ্যালক আমার ভাইয়ের স্ত্রী কুসুমকে অন্যত্র বিবাহ দেওয়ার মাধ্যমে টাকা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাতের ষড়যন্ত্রে করতে থাকে। ভাইয়ের স্ত্রী কুসুমের নামে শাহপুর সোনালী ব্যাংক লিমিটেড গোপন হিসাব নাম্বারে পাঠানো ৫ লক্ষ টাকা ও বিয়ের সময় দেওয়া ১১ ভরি স্বর্ণালংকার যার বাজার মূল্য ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা সহ ১০ লক্ষ ২৮ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে নিয়ে যায়। পরে আমার ভাই তার স্ত্রী কুসুমসহ (কুসুমের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৮৪০৮৩৮৭৫৯) তার পরিবারের লোকজনের সাথে বিভিন্ন ফোন নাম্বারের মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের সাথে যোগাযোগে ব্যর্থ হন। এরপর তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে বাহারাইনের সালমানিয়া হসপিটালে ভর্তি রয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এদিকে, স্থানীয় এলাকার লোকজনের মারফত আমরা আরো জানতে পারি আমার ভাইয়ের স্ত্রী কুসুম বিয়ের পূর্বেই একটি ছেলের সাথে প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। বিয়ের সময় তারা বিষয়টি গোপন রাখে। পরে এ ঘটনার পর আমার ভাইয়ের কথা মতো ১৫ মে ভাইয়ের শ্বশুর বাড়িতে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গেলে তার শ্বশুর, শ্বাশুড়ী ও শ্যালকরা আমাকে জানায় কুসুম তার পূর্বের প্রেমিকের হাত ধরে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার এবং একমাত্র ছেলে সন্তান হাছানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। উল্টো তারা আমাকে এবং আমার পরিবারের লোকজনকে হুমকি দিয়ে বলে আমরা যেন কুসুমের সাথে কোনো যোগাযোগের চেষ্টা না করি। পরে এসব বিষয়ে বাহারাইনে চিকিৎসাধীন থাকা আমার ভাই তরুনকে জানালে তিনি আমাকে এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বলেন। পরে আমি পুরো বিষয় বিষয়টি লিখিতভাবে উল্লেখ করে নোয়াখালী পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ বিষয়টি সরজমিনে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নেওয়ার জন্য চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। এদিকে পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে পরধন লোভী, প্রতারক, বিশ্বাসঘাতক শ্বশুর, শ্বাশুড়ী, দুই শ্যালক, খালাতো শ্যালক সুমন আমার ভাইয়ের স্ত্রী কুসুমকে অন্যত্র বিবাহ দেওয়ার নাম করে ১০ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতকারী অভিযুক্তরা আমার চিকিৎসাধীন ভাইয়ের মোবাইল ফোনে হুমকি দিচ্ছে এ বিষয় নিয়ে থানা আদালতে কোনো মামলা করলে তারা আমার ভাইয়ের ছেলে হাছানকে হত্যা করবে। এদিকে, প্রবাসী শাহ আলম তরুন মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের কাছে আকুতি জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সদয় দৃষ্টি দিয়ে তাকে জীবন-মরণের এই কঠিন পরিস্থিতি রক্ষা করার আকুল আবেদন জানান।



মন্তব্য চালু নেই