ছেলে সেঞ্চুরি না পাওয়ায় মাঠেই মারা গেলেন বাবা! কলকাতার মাঠেই ঘটনা

খেলার মাঠে তো কত মৃত্যুই হয়! এমন বিরল ঘটনা কি ঘটেছে এর আগে? একসময়ে বাংলার প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার সঞ্জীব দত্ত খেলার মাঠেই অকালে ঝরে গিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার ফিল হিউজও তো মাঠেই মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু এমন মৃত্যুর কথা কেউ কোনওদিন শুনেছেন বলে মনে হয় না। স্মরণকালের মধ্যে এমন মৃত্যুর কথা কেউ শুনেছেন কিনা, তা-ও বলা সম্ভব নয়।

এ হেন বিরল মৃত্যুর ঘটনা ঘটল কলকাতা ময়দানে। ছেলের খেলা দেখতে গিয়ে অকালে চলে গেলেন বাবা। মঙ্গলবার সিএবি ক্রিকেট লিগে শরৎ সমিতির বিরুদ্ধে নেমেছিল সাবার্বান। সাবার্বানের ক্রিকেটার তূর্য সাহা বেশ ভালই ব্যাট করছিলেন। সেঞ্চুরির গন্ধ যখন পেতে শুরু করেছেন সবাই, ঠিক সেই সময়েই ছন্দপতন ঘটে।

আউট হয়ে যান তূর্য। স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে তূর্য ব্যক্তিগত ৮০ রানের মাথায় আউট হন। ছেলে আউট হয়ে ফিরতেই বাবাও ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে। তূর্যের বাবা তুলসী সাহা নিজেও ক্রীড়াপ্রেমী। ছেলেকে বড় ক্রিকেটার করার নেশায় বুঁদ ছিলেন বাবা। সাবার্বানের কর্তাদের কাছ থেকে জানা যায়, গত বছরও ছেলের খেলা দেখার জন্য মাঠে নিয়মিত হাজির হয়েছিলেন। ছেলের সবক’টি ম্যাচই দেখেছিলেন সেবার।

এদিনও সোদপুর থেকে বাইক চালিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে টাউন মাঠে পৌঁছে যান তুলসীবাবু। ছেলের খেলা বলে কথা! খেলা শুরুর আগে সাবার্বানের এক কর্তাকে তুলসীবাবু বলেছিলেন, ‘হৃৎপিণ্ডে একটা সমস্যা ধরা পড়েছে।’ কিন্তু এটাই যে এমন মারাত্মক আকার নেবে, তা কে জানত!

শরৎ সমিতির বোলারদের বেশ ভালই সামলাচ্ছিলেন ছেলে তূর্য। ৮০ রানে হঠাৎই মনোসংযোগ হারিয়ে ফেলেন তিনি। ছেলে আউট হয়ে ফিরতেই মাঠের বাইরে চেয়ারে বসে থাকা তুলসীবাবুও এলিয়ে পড়েন মাটিতে।

তুলসীবাবুকে পড়ে যেতে দেখে অকুস্থলে ছুটে যান সুবার্বানের কর্তারা। তাঁরা মনে করেন, তুলসীবাবুর রক্তে সুগার লেভেল কমে গিয়েছে। মাঠেই চিনি খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয় তুলসীবাবুকে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। মাঠ থেকেই তুলসীবাবুকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান তুলসীবাবু। অর্থাৎ মাঠেই প্রাণ হারান তূর্যের বাবা। খেলা অবশ্য বন্ধ হয়নি। তা চলতে থাকে। বাবার নিথর শরীর নিয়ে তূর্যকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।



মন্তব্য চালু নেই