ছিটমহলে আলোর দিশা, ‘হ্যাঁ’ বলবেন মমতা

দীর্ঘ ৬৫ বছর ধরে চলছে ছিটমহল বিনিময় নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দরকষাকষি। তবে অবশেষে ছিটমহল বিনিময়ে সব আপত্তি তুলে নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়েও দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব সঞ্জয় মিত্র।

বুধবার কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারও চায় ৬৫ বছর ধরে ঝুলে থাকা বিষয়টির সমাধান হোক।

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সঞ্জয় মিত্রের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশের ছিটমহল বিনিময়ে নীতিগতভাবে কোনো আপত্তি নেই রাজ্য সরকারের। তবে ছিটমহলের যে অংশ পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত হবে, সেখানে প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রণয়ন ও পরিকাঠামো উন্নয়নে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। রাজ্য চায় সেই আর্থিক দায়িত্বের পুরোটাই নিক কেন্দ্র।

আনন্দবাজার বলছে, বৃহস্পতিবার কোচবিহারের জনসভায় নিজের অবস্থান পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার ডাকুর হাট নামে কোচবিহারের যে প্রত্যন্ত এলাকায় মমতার জনসভা অনুষ্ঠিত হবে তার মোটামুটি দেড়শ মিটারের মধ্যেই বাংলাদেশি ছিটমহল করলা।

আগামীকালের জনসভায় মমতা আসলেও ছিটমহল নিয়ে কী বলবেন তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার অন্ত নেই। তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে ওই কোচবিহারের একটি জনসভাতেই মমতা ছিটমহল ইস্যুতে প্রথম তার অবস্থান বদলের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি চান বাসিন্দাদের সুষ্ঠু পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেই ছিটমহল বিনিময় হোক।

এরপর সেপ্টেম্বরে কলকাতায় বাংলাদেশের সাবেক ডেপুটি হাই কমিশনার আবিদা ইসলাম মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলে মমতা ছিটমহলবাসীর দুঃখ-দুর্দশার কথা বর্ণনা করেন।

গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে স্থল সীমান্ত চুক্তির খসড়া অনুমোদিত হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের দুই প্রতিনিধি সুগত বসু ও মুমতাজ সংঘমিতা এত দিন বিরোধিতা করে এলেও এই বৈঠকে চুক্তির পক্ষেই সায় দেন। গত সোমবার ভারতের পার্লামেন্টে বিনা বাধায় রিপোর্টটি উত্থাপিত হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই অবস্থান পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, ‘স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল সংসদে পাশ হওয়াটা এখন সময়ের অপেক্ষা।’

ছিটমহল বিনিময় হলে কত সংখ্যক পরিবার ঠিকানা পরিবর্তন করতে চান সে বিষয়ে একটি পরিসংখ্যানও রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির। কমিটির সমন্বয়ক বলছেন, ‘বর্তমানে ভারতীয় ছিটমহলের ১৪৯টি পরিবারের ৭৩৪ জন বাসিন্দা ঠিকানা বদলে ভারতের নাগরিকত্ব পেতে চান।’



মন্তব্য চালু নেই