চীনকে অগ্রগতির অংশীদার হিসেবে চায় বাংলাদেশ

নিবিড় ও ব্যাপক অংশীদারিত্ব ভিত্তিক সহযোগিতা, পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধার ওপর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক। বাংলাদেশও তার সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে পেতে চায় চীনকে। এর জন্য চীনা ব্যবসায়ীদের আকর্ষণীয় পরিবেশ ও সুযোগ সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চীনের কুনমিংয়ের হাইগেং কনফারেন্স সেন্টারে শনিবার সকালে নবম চায়না-সাউথ এশিয়া বিজনেস ফোরামে বক্তব্য দেয়ার সময় এ কথা বলেন তিনি।

চীনের অর্থনৈতিক ও কারিগরি অগ্রগতির প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে চীন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হচ্ছে। আর এটা সম্ভব হচ্ছে দেশটির গতিশীল ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের কারণে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমারের মধ্যকার অর্থনৈতিক করিডোর বাস্তবায়নের বিষয়টি দ্রুত কার্যকর করা গেলে সমগ্র অঞ্চল আর্থ-সামাজিকভাবে উপকৃত হবে।’

চীনা বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ও বিল্ড-ওন-অপারেট-ট্রান্সফার (বুট) প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, জলপথ, সড়ক ও মহাসড়ক নির্মাণের মতো বাংলাদেশের বিশেষ বিনিয়োগ কর্মসূচিতে আগ্রহ খুঁজে পেতে পারেন।’

বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন জাহাজ থেকে শুরু করে সস্তা পণ্য পর্যন্ত উৎপাদন করছে।
আমাদের সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর ও বিমানবন্দরসমূহ স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য সহায়ক।’

বাংলাদেশের এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেড) বিদেশি বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রামে পৃথক অর্থনীতি ও শিল্পাঞ্চল বরাদ্দের বিষয়টি বিবেচনা করছে। এছাড়া বাংলাদেশে সাতটি বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা গঠন করা হচ্ছে।’

বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিস্থিতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের পাঁচ কোটি লোক নিম্নআয় থেকে মধ্যআয়ের স্তরে পৌঁছেছে। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে দেশের রপ্তানি আয় ১০৭ শতাংশ বেড়েছে, রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬২ শতাংশ, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ২১৭ শতাংশ এবং বৈদ্যুতিক সক্ষমতা ১০৯ শতাংশ বেড়েছে।’

এসময় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আরো বাংলাদেশি পণ্য চীনের বাজারে প্রবেশ করতে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ জামিল আহমেদ, সার্কের সেক্রেটারি জেনারেল অর্জুন বাহাদুর থাপা, সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ইসমাইল আসিফ, চায়না কাউন্সিল ফর প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের চেয়ারম্যান জায়াং চেংওয়ে, ইউনান প্রদেশের কমিটি অব পিপলস কংগ্রেসের সেক্রেটারি কিন গুয়াংরং।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদসহ সার্কভুক্ত বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং চীন, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও নেপালের বিভিন্ন বাণিজ্য সংস্থার নেতারা অংশ নেন।



মন্তব্য চালু নেই