ঘরে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে হীরা

একদিকে এসএসসি পরীক্ষার সময় ঘনিয়ে আসছে, অন্যদিকে বাড়িতে বাবার লাশ। কী করবে হীরা খাতুন? এই প্রশ্নের জবাব সে নিজেই খুঁজে নিয়েছে।
ঘরে বাবার লাশ রেখে চোখ জল নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে হীরা। এরপর বাড়ি গিয়ে চির বিদায় দিয়েছে বাবাকে। মঙ্গলবার যশোরের অভয়নগর উপজেলায় এমন ঘটনা ঘটে।
হীরা খাতুন উপজেলার মহাকাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও চেঙ্গুটিয়া গ্রামের মোশারফ মোল্যার মেয়ে।
স্বজনরা জানান, দীর্ঘদিন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন হীরার বাবা মোশাররফ মোল্যা। মঙ্গলবার সকালে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুতে বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে যায়। কান্নায় ভেঙে ও মুচড়ে পড়ে একমাত্র সন্তান হীরাও।
একদিকে বাড়িতে বাবার লাশ, অন্যদিকে পরীক্ষা। শেষ পর্যন্ত বাড়িতে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় হীরা (রোল নং- ৫১৫৮৮২)। ফুফু লাকী সুলতানা ও খালা নূর জাহান বেগমকে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া শংকরপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে।
পরীক্ষা শেষে কেন্দ্রে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে হীরা খাতুন জানায়, বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এসেছি। পরীক্ষা মোটামুটি ভালো হয়েছে। এখন বাড়ি গিয়ে বাবার মুখখানা শেষবারের মতো দেখবো।
হীরা খাতুনের ফুফু লাকী সুলতানা জানান, হীরার বাবা মোশারেফ মোল্যা রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাতেন। খুব কষ্টে ওদের সংসার চলে। ওদের সংসার এবার কীভাবে চলবে বুঝতে পারছি না।
কেন্দ্রের সমন্বয়কারী শিক্ষক এসএম ফারুক আহমেদ জানান, মেয়েটির বাবা মারা গেছে সকালে। খালা ও ফুফুকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিল পরীক্ষা কেন্দ্রে। খুব কান্নাকাটি করছিল। আমরা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে সহযোগিতা করেছি।
মন্তব্য চালু নেই