ঘণ্টায় ৩ কিলোমিটার গাড়ির গতি

পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে বাড়ি ছুটছে রাজধানীর কয়েক লাখ মানুষ। কিন্তু ঈদের আনন্দ যাত্রার ধকলে ফিকে হয়ে আসছে। গাড়ি চাকা ঘুরেও ঘুরছে না।

পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে দিনাজপুরে নিজ বাড়িতে যাচ্ছেন শাহ জামান সরকার সবুজ।

বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় রাজধানীর শ্যামলি থেকে গাড়িতে ওঠেন তিনি। গাবতলীতে পৌঁছাতেই লেগে যায় এক ঘণ্টা। আর গাবতলী থেকে বাইপাইল পর্যন্ত খুড়িয়ে খুড়িয়ে এগোলেও গাড়ির চাকা থমকে যায় সেখানে। সকাল ৮টা পর্যন্ত বাইপাইলের যানজটে কেটে যায়।

সবুজ জানান, চন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছাতে সকাল ১০টা বেজে যায়। চন্দ্র থেকে কালিয়াকৈর যেতে লেগে যায় আরো ১ ঘণ্টা। ঢাকা থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ৩০ থেকে ৩৬ কিলোমিটার হবে। অর্থাৎ ঘণ্টায় ৩ কিলোমিটার বেগে চলেছে গাড়ি। আর কালিয়াকৈর থেকে যানজট সেভাবে না থাকলেও গাড়ি চলছে ধুকে ধুকে। বৃষ্টি ও কাদাপানিতে রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় গাড়ি ধীরে চলতে বাধ্য হচ্ছে।

সবুজের প্রশ্ন- কখন যাব বাড়ি? নিজেই বলেন, ‘আল্লাহ জানেন। দিনাজপুরে যেতে স্বাভাবিকভাবে যেখানে সাত-আট ঘণ্টা লাগে, সেখানে ঢাকা থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত আসতেই লেগে গেছে ১১ ঘণ্টা। এখনো বহু পথ। তবু যেতে হবে। বাড়ির টানে, নাড়ির টানে। বাবা-মা, ভাইবোনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করতে নিতে যেতেই হবে।’

সবুজের মতো অসংখ্য মানুষ বাড়ির পথে গাড়িতে বসে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। কিছুই করার নেই। চুপচাপ বসে শুধু ক্ষণ গণনা ছাড়া আর কি-ইবা করার থাকে এমন অবস্থায়।

গাজীপুরের চন্দ্রায় এখনো তীব্র যানজট লেগে আছে। পাটুরিয়া ঘাটে পারের অপেক্ষায় শত শত গাড়ি। মানিকগঞ্জের উথলি থেকে ঘাট পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সবাইর একটাই প্রশ্ন- কখন যাব বাড়িতে?

তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, পথে যত কষ্টই হোক, বাড়ি যেতে হবে- এটিই চূড়ান্ত। বাড়ি ফেরার পথে শত কষ্ট স্বীকার করার অভ্যাস আছে। কিন্তু এভাবে আর কত দিন। আমরা কি বেরিয়ে আসতে পারব না এই দূরবস্থা থেকে- প্রশ্ন ঘরমুখো মানুষের।



মন্তব্য চালু নেই