গৃহবধূর ইজ্জতের মূল্য নির্ধারণ করেছে মাত্র ৫২ হাজার টাকা!
দিনাজপুর: জেলার বিরল উপজেলায় এক হিন্দু গৃহবধূর ইজ্জতের মূল্য নির্ধারণ করেছে মাত্র ৫২ হাজার টাকা। ধর্ষণ ইজ্জতের মূল্য ৫২ হাজার!
শুক্রবার দুপুরে থানা চত্বরে শালিসি বৈঠকে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। এ ঘটনায় ধর্ষিতাকে তার স্বামী তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এরপর তার ঠাঁই হয়েছে বাবার বাড়িতে। অন্যদিকে, ২০ ঘণ্টা আটক রেখে ধর্ষককেও হাজত থেকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
বৈঠকে বিরল উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা বেগম সোনা, ইউপি সদস্য রাজা দশরথসহ আওয়ামী লীরগর কয়েকজন নেতা এবং পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
গত বুধবার রাত ৮টার দিকে বিরল উপজেলার রাণীপুকুর ইউপির বরাহ নগর গ্রামের আব্দুস ছালামের বখাটে ছেলে মহিদুর (১৮) এক হিন্দু গৃহবধূর (২০) ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এ সময় ধর্ষিতার চিৎকারে তার স্বামীসহ এলাকার লোকজন ছুটে এসে ধর্ষক মহিদুরকে আটক করে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ একটি স্বার্থন্বেষী মহল বিষয়টি এক লাখ টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়।
এ ঘটনায় বিরল থানার এসআই আশরাফুল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ধর্ষক ও ধর্ষিতাকে থানায় নিয়ে আসে। তবে দীর্ঘ সময়পরও এ ব্যাপারে থানায় কোনো মামলা হয়নি।
শুক্রবার দুপুরে এসআই আশরাফুলের নেতৃত্বে বিরল থানা চত্বরে একটি শালিশ বৈঠক বসানো হয়। সেখানো টাকার বিনিময়ে উক্ত প্রহসনমূলক বিচারের রায় দেয়া হয়।
এদিকে, ধর্ষিতাকেও ২০ ঘণ্টা ধরে থানায় রাখা হলেও তার কাছ থেকে কোনো মামলা নেয়া হয়নি এবং তাকে কোন ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়নি বলে ধর্ষিতার পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে বিরল থানার ওসি আব্দুল হাই সরকার জানান, বিষয়টির ব্যাপারে এসআই আশরাফুল সব জানেন।
এ ব্যাপারে এসআই আশরাফুল জানান, থানায় শালিস বৈঠকের মাধ্যমে ধর্ষকের কাছ থেকে ধর্ষিতাকে নগদ ৫২ হাজার টাকা দেয়া হয়। এরপর ধর্ষককে ছেড়ে দেয়া হয়।
পুলিশ ও স্বার্থন্বেষী মহলের কারণে ধর্ষক ছাড়া পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শালিস বৈঠকেই ধর্ষিতার স্বামী কুথার চন্দ্র ধর্ষিতাকে ত্যাগ করেন। এজন্য তার কাছ থেকেও ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয় ওই শালিসের বিচারকরা। আরও অভিযোগ উঠেছে ধর্ষককে রক্ষার দায়িতে থাকা পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা এক লাখ টাকা উৎকোচ নিয়েছে ধর্ষকের কাছে।
[ সূত্র ]
মন্তব্য চালু নেই