গৃহবধুর গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে মামলা ॥ স্বামী গ্রেফতার

নওগাঁর রাণীনগরে গৃহবধু সাথী (২২)কে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন মিলে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে রাণীনগর থানায় ৫জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে এজাহার নামীয় আসামী স্বামী সুমন (২৫) কে পুলিশ গ্রেফতার করে গতকাল বুধবার জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।

জানা গেছে, উপজেলার বানিয়া পাড়া গ্রামের জিল্লুর রহমানের মেয়ে সাথীকে গত ৩বছর আগে একই উপজেলার ছয়বাড়িয়া গ্রামের দবির হোসেনের ছেলে সুমন বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই মোটা অংকের পূণরায় যৌতুকের দাবি সহ কারণে-অকারণে স্বামী সহ শ্বশুর পরিবারের লোকজন মারপিট করত। এবিষয়গুলো নিয়ে কয়েক দফা উভয় পক্ষের মধ্যে পারিবারিক ভাবে শালিস-বৈঠক হলেও স্থায়ী কোন সমাধান হয় না। ইতিমধ্যেই তাদের ঘড়ে জম্ম নেয় শুভ নামের এক পুত্র সন্তান। কিন্তু পাষান্ড সুমন কোন কিছুতেই সন্তোষ্ট না হয়ে তার স্ত্রী সাথীর উপর মারপিটের মত ঘিন্ন আচরণ অব্যহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতা ১৫ জুন দিবাগত রাত অনুমান সাড়ে ১১টায় সুমন ও তার পরিবারের লোকজন একযোগে পরিকল্পনা করে সাথীকে প্রথমে এ্যালোপাথারী মারপিট ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ের গোড়ালী কেটে দিলে প্রচুর রক্তক্ষরনের কারণে গৃহবধু সাথী অচেতন হয়ে পড়লে পাষান্ড স্বামী সুমন ও তার বাবা, ভাই সহ পরিবারের সবাই মিলে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিলে সাথীর শরীরিরের হাটু থেকে গলা পর্যন্ত পুড়িয়ে যায়। ওই অবস্থায় পাষান্ডরা মিলে গৃহবধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ির পার্শ্বে খালের পানিতে ফেলে দেয়। তার গুংগানিতে প্রতিবেশিরা ওই রাতেই তাকে উদ্ধার করে রাণীনগর হাসপাতালে নিয়ে আসলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আশাংকাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করায়।

চিকিৎসকরা বলছেন, প্রায় এক মাস ধরে চিকিৎসারত থাকলেও গৃহবধু সাথী শঙ্কামুক্ত নয়। তার শরীরিরের বেশ কিছু অংশে পচন ধরেছে। গরিব বাবা-মা অর্থাভাবে যথাযথ চিকিৎসা করাতে না পাড়াই ইতিমধ্যেই মেডিকেল থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসছে। মেয়ের চিকিৎসার জন্য ব্যস্ত থাকায় এক মাস সাত দিন পর সাথীর বাবা জিল্লুর রহমান বাদি হয়ে সুমন সহ ৫ জনকে আসামী করে রাণীনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে। যার নং- ১৪, তাং- ২১/০৭/১৫ইং। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ স্বামী সুমন কে গ্রেফতার করে।

এব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি আব্দল্লাহ আল-মাসউদ চৌধুরী জানান, গৃহবধুকে নির্যাতন করে যেভাবে তার গায়ে আগুন দেওা হয়েছে সত্যই এটা নৃশংসতা। তার শরীরিরের স্পর্শকাতর অংশ সহ প্রায় পুরো শরীরির আগুনে পুড়ে ঝলসে গেছে। মামলা দেড়িতে হলেও সাথে সাথে মূলহোতা সুমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদেরকে গ্রেফতার অভিযান অব্যহত রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই