‘গুলশান হামলার অনুমোদন দেন বড় হুজুর’

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার অনুমোদন দেন নব্য জেএমবির আধ্যাত্মিক নেতা এবং জেএমবির (মূল ধারার) একাংশের আমীর মাওলানা আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর। শুক্রবার (৩ মার্চ) সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান। আবুল কাশেমকে গ্রেফতারের পর এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

মনিরুল বলেন, ‘নব্য জেএমবির হামলাগুলোয় বড়হুজুরের অনুমতির প্রয়োজন হয়। আবুল কাশেম নব্য জেএমবিতে বড়হুজুর বলে পরিচিত ছিলেন। তিনি গুলশান হামলাসহ বেশ কয়েকটি হামলার অনুমোদন দিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।’

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মিরপুরের সেনপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে। মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নব্য জেএমবির উত্তরাঞ্চলের সামরিক কমান্ডার রাজীব গান্ধি গ্রেফতারের পর তার আবুল কাশেমের বিষয় আমরা জানতে পারি। সে যে ঠিকানা দেয় সেই ঠিকানা অনুযায়ী আমরা দিনাজপুরের একটি মাদ্রাসায় আবুল কাশেমকে খুঁজতে যাই। কিন্তু সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। কারণ ওই মাদ্রাসায় প্রিন্সিপাল থাকলেও সে সেখান থেকে প্রায় দেড় বছর আগে পালিয়ে যায়। গত বুধবার বনানী থেকে জঙ্গি নেতা বড়মিজান গ্রেফতার হওয়ার পর আবুল কাশেমের সন্ধান পাই আমরা। এরপর ‍বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুরের পর্বতা এলাকার একটি দোকানের বিকাশ নম্বরে এক ভক্তের পাঠানো ১৫ হাজার টাকা নিতে এসে সে গ্রেফতার হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আবুল কাশেমকে নব্য জেএমবির অনেকে বড় হুজুর নামে সম্বোধন করে। ২০১৪ সালে একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা তার বিষয়ে তথ্য দেয়। ২০১৫ সালে নব্য জেএমবির প্রধান নিহত তামিম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক হয় আবুল কাশেমের।’

মনিরুল ইসলাম জানান, ‘কথিত বড় হুজুর নব্য জেএমবির সদস্যদের কথিত জিহাদের ব্যাখ্যা, ইসলাম কোরান ও হাদিসের বিকৃত ব্যাখ্যা দিতো। তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম। সেন দিনাজপুরের রানীর বন্দর এলাকার একটি মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করতো। নব্য জেএমবির প্রধান তামিম চৌধুরী, মারজান, হাতকাটা মাহফুজ, রাজীব গান্ধী ওরফে জাহাঙ্গীরসহ জেএমবির অনেক বড় নেতা এই বড় হুজুরের অনুরক্ত ছিল। ইতোপূর্বে গ্রেফতার হওয়া অনেক জঙ্গির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছিল। আবুল কাশেম স্বপরিবারে অনেক আগে থেকেই পুরাতন জেএমবির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে নব্য জেএমবির মতাদর্শ নিয়ে তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমে মনগড়া ধর্মীয় মতবাদ প্রদান করে দলটিকে হিংস্র করে তোলেন তিনি। আদালতে সোপর্দ করে আবুল কাশেমকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানাবে পুলিশ।’



মন্তব্য চালু নেই