গণতন্ত্র ক্রসফায়ারে : ফখরুল

সরকার গণতন্ত্রকে ক্রসফায়ারে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এর দায় বর্তমান ‘অবৈধ’ সরকারকেই নিতে হবে।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বৃহস্পতিবার বিকেলে এক গণজমায়েতে তিনি এসব কথা বলেন। মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এর আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা আলমগীর বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র, মানবতা, মানুষের জীবনের নিরাপত্তাসহ সব আজ বিপন্ন। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে এ সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য দরকার। এর মাধ্যমে অতি দ্রুত একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে।’

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘দেশে একটি অনির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। এর ফলে একটি বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এই শূন্যতা দীর্ঘদিন চললে দেশের পরিণতি হবে ভয়াবহ। এর ফলে যে ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে, এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা-পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। সরকারের আশীর্বাদপুষ্টরাই হত্যা-গুমের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ বা জবাবদিহিতা নেই।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব ছাড়া গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে না। দখলদার সরকারকে হটাতে না পারলে ইলিয়াস আলীর মতো পরিণতি হতে পারে। এজন্য নেতা-কর্মীদের নতুন করে সুসংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, গণতন্ত্র ছাড়া শ্রমিক আন্দোলন কখনো সফল হয়নি। তাই একটি গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থা কায়েম এখন সময়ের দাবি।

তিনি আরো বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। জোর করে ক্ষমতায় থেকে এ সরকার হত্যা, গুম করছে। এ অবস্থা থেকে বাঁচতে আন্দোলনের বিকল্প নেই।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘বর্তমানে এখন সব জায়গায়ই চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতে বাসায় থাকাও নিরাপদ মনে করছে না দেশের মানুষ। এ অবস্থায় দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন। সরকার দ্রুত নির্বাচন না দিলে অতীতের মতো আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটানো হবে।

অপর ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা বলেন, ‘রানা প্লাজার ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা ছিল না। বিএনপির হরতাল কর্মসূচি ছিল। হরতালে বাধা দেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীনরা জোর করে ওই ভগ্ন ভবনে শ্রমিকদের প্রবেশ করিয়েছিলেন। বিএনপি ক্ষমতায় এলে একদিন না একদিন এর বিচার হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘হত্যা, গুম এই সরকারের ম্যানিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। একের পর এক হত্যা, গুম চলছে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী গালে হাত দিয়ে বসে আছেন। কোনো মন্তব্য নেই।’

খোকা বলেন, ‘দিনদুপুরে নারায়ণগঞ্জ থেকে সাতজনকে অপহরণ করা হলো। প্রশাসন বা কেউ কিছু জানে না। এটা কেমন করে সম্ভব? আইভি বলেছেন, সরকারের এমপি শামীম ওসমানের লোকজনে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘কার কাছে আহাজারি করব। দলের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে পাড়ায় মহল্লায় সংগঠন গড়ে তুলে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। লড়াইয়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারকে বিদায় করতে হবে।’

ক্ষমতাসীনরা দেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছে দাবি করে যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘হাসিনা গণতন্ত্রকে ভূলুণ্ঠিত করেছেন। তার হাত রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। রক্তে রঞ্জিত হাতে এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। অতীতের যা হওয়ার হয়েছে, এবার নতুন করে আন্দোলনে নামতে হবে।’

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাহান ওমর, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুব বিষয়ক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই