খোকন রাজাকারের মামলার রায়ের অপেক্ষা

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌর মেয়র ও বিএনপি নেতা পলাতক জাহিদ হোসেন খোকন রাজাকারের রায় বৃহস্পতিবার ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করবেন।

এর আগে বুধবার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণের জন্য মামলাটি ট্রাইব্যুনালের কার্যতালিকায় আসে।

গত ১৭ এপ্রিল উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে খোকন রাজাকারের মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।

গত ১৩ এপ্রিল থেকে খোকনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এরপর খোকনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আবদুস শুক্কুর খান।

২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর থেকে গত ২ এপ্রিল পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তা সত্যরঞ্জন দাশসহ খোকন রাজাকারের বিরুদ্ধে সাক্ষীর জবানবন্দি পেশ করেছেন ২৪ জন ।

পলাতক এই আসামির পক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী জবানবন্দি পেশ করেনি। কারণ, আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস শুক্কুর খান মোট ৩০ জন সাক্ষীর তালিকা ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো সাক্ষী আদালতে আনতে না পারায় তিনি তার আবেদন প্রত্যাহার করেন।

২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর খোকন রাজাকারের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে তার মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

এর আগে ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়। খোকন রাজাকারের বিরুদ্ধে ১৬ জন নারী ও শিশুসহ ৫০ জনকে হত্যা, তিনজনকে পুড়িয়ে হত্যা, ২ জনকে ধর্ষণ, ৯ জনকে ধর্মান্তরিত করা, ২টি মন্দিরসহ ১০টি গ্রামের বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ, সাতজন গ্রামবাসীকে সপরিবারে দেশান্তরে বাধ্য করা ও ২৫ জনকে নির্যাতনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছে।

পলাতক খোকন রাজাকারকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পরে তাকে হাজির করতে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠ ও ডেইলি স্টার-এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পায়।

কিন্তু হাজির না হওয়ায় ওই বছরের ১৪ আগস্ট তার অনুপস্থিতিতেই খোকন রাজাকারের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। সঙ্গে সঙ্গে একই দিনে ১৪ আগস্ট খোকন রাজাকারের পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেন আবদুস শুক্কুর খানকে।

২০১৩ সালের ২৩ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দখিল করার পরে ১৮ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

২০১২ সালের ১৬ এপ্রিল শুরু হয়ে ২৮ মে শেষ করে। পরে ২৯ মে ১৩টি প্রসিকিউশনের কাছে দাখিল করে।

গত বছরের ৯ অক্টোবর ১১টি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করে খোকনের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। বিচার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন আসামি।

২০১১ সালে তিনি ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন।



মন্তব্য চালু নেই