কোকোর স্থলে বিবাদীভুক্ত হলেন খালেদা জিয়া

ড্যান্ডি ডাইংয়ের ৪৫ কোটি টাকা ঋণখেলাপি মামলায় বিবাদীভুক্ত হয়েছেন আরাফাত রহমান কোকোর মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা ‍জিয়া।

কোকো মারা যাওয়ায় খেলাপি ঋণের মামলায় খালেদার পাশাপাশি কোকোর স্ত্রী এবং দুই মেয়েকেও বিবাদীভুক্ত করেছেন আদালত।

সোমবার নির্ধারিত দিনে ঢাকার অর্থঋণ আদালত-১-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক রোকসানা আরা হ্যাপী সোনালী ব্যাংকের আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

একই সঙ্গে আগামী ১২ এপ্রিল হাইকোর্টের আদেশ দাখিল ও ইস্যু (বিচার্য বিষয়) গঠনেরও দিন ধার্য করা হয়েছে। আদালত শেষবারের মতো আসামিপক্ষকে এ সময় দিয়ে বলেছেন, হাইকোর্টের আদেশ দাখিল করা না হলে ওই দিন ইস্যু গঠন করা হবে।

সোনালী ব্যাংকের দায়ের করা ৪৫ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের এ মামলার আসামি ছিলেন কোকো। তিনি মারা যাওয়ায় গত ৮ মার্চ খালেদাসহ অন্যদের বিবাদীভুক্ত করার আবেদন জানিয়েছিলেন সোনালী ব্যাংকের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন।

আবেদনে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আরাফাত রহমান কোকো এ মামলার বিবাদী। তিনি মারা যাওয়ায় খেলাপি ঋণ দেওয়ানি কর্মবিধি আইনের ২২ নম্বর আদেশের নিয়ম ৪ অনুসারে তার সম্পদের ওয়ারিশরা বিবাদীভুক্ত হবেন। তাই তার ওয়ারিশ হিসেবে খালেদা জিয়া, স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে বিবাদীভুক্ত করার আবেদন জানানো হয়। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।

এদিকে কোনো ছেলে না থাকায় বড় ভাই তারেক রহমানও কোকোর সম্পদের ওয়ারিশ। তবে তারেক রহমান এ মামলায় আগে থেকেই বিবাদী হওয়ায় তাকে নতুন করে বিবাদীভুক্ত করার আবেদন জানানো হয়নি।

এর আগে দায়ের হওয়া এ মামলার বিবাদীরা হলেন— বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, শামস এস্কান্দার, সাফিন এস্কান্দার, সুমাইয়া এস্কান্দার, শাহীনা ইয়াসমিন, বেগম নাসরিন আহমেদ, কাজী গালিব আহমেদ, শামসুন নাহার ও মাসুদ হাসান।

মামলার ১০ নম্বর বিবাদী মোজাফফর আহমেদ মারা যাওয়ায় তার স্ত্রী শামসুন নাহার ও ছেলে মাসুদ হাসানকে এ মামলায় বিবাদীভুক্ত করা হয়।

১৯৯৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিবাদীরা ড্যান্ডি ডায়িংয়ের পক্ষে সোনালী ব্যাংকে ঋণের জন্য আবেদন করেন। এরপর ওই বছরের ৯ মে সোনালী ব্যাংক বিবাদীদের আবেদনে উল্লেখ করা ঋণ মঞ্জুর করে।

২০০১ সালের ১৬ অক্টোবর বিবাদীদের আবেদনক্রমে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ তাদের সুদ মওকুফ করে। পরবর্তী সময়ে বিবাদীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক আবারও ঋণ পুনঃ তফসিলীকরণও করে দেয়। কিন্তু বিবাদীরা ঋণ পরিশোধ না করে বার বার কালক্ষেপণ করতে থাকেন।

২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধের জন্য বিবাদীদের চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হলেও তারা কোনো ঋণ পরিশোধ করেননি।

২০১৩ সালের ২ অক্টোবর ৪৫ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৫ টাকা ঋণখেলাপির অভিযোগে ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করেন সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখার সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।

এ বছরের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে আরাফাত রহমান কোকো মারা যান।



মন্তব্য চালু নেই