কে এই ‘শফিক রেহমান’ আদি থেকে অদ্য

‘বিশিষ্ট সাংবাদিক’ এই শব্দটি শফিক রেহমানের নামের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। একই সাথে বিশ্ব দরবার থেকে বাংলাদেশে ভালবাসা দিবস পালনের প্রথম কান্ডারীও তিনি। আশির দশকে দেশে স্বৈরশাসনের প্রতিবাদ করে দেশান্তরিত হয়ে নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচার পতনের পর দেশে ফিরেন ভালবাসা দিবসটি নিয়ে।

শফিক রেহমান ১১ নভেম্বর ১৯৩৪ সালে বগুড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সাইদুর রহমান। ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রী অর্জন করে শফিক রেহমান। উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য ১৯৫৭ সালে লন্ডনে পাড়িজমান তিনি। ১৯৬৮ সালে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হয়ে দেশে ফিরে আসেন শফিক রেহমান।

৭১’এ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিদেশে মুক্তিযোদ্ধের ভয়াবহতার চিত্র ও পাকিস্থানিদের পৈশাচিকতা তুলে ধরেন তিনি। সে সময় তিনি কাজ করেছেন আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী গণমাধ্যম বিবিসি’তে। পরবর্তিতে দৈনিক ইত্তেফাকসহ অনেক গণমাধ্যমেই কাজ করেন তিনি। গণমাধ্যম ছাড়াও তিনি কাজ করেছেন হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালসহ অনেক বিশ্বমানের আর্থিক সংস্থায়।

১৯৮৮ সালে লন্ডনে বহুভাষাভিত্তিক স্পেকট্রাম রেডিও প্রতিষ্ঠা করেন, পরে বাংলাদেশে এসে দৈনিক যায়যায় দিনের প্রতিষ্ঠা করেন কিন্তু তৎকালীন স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে প্রায় ছয় বছর লন্ডনে দেশান্তরিত ছিলেন তিনি। ৯০’র দশকে স্বৈরাচার পতনের পর দেশে ফিরে এসে যায়যায় দিন পুনঃপ্রকাশ করেন এই মহাপুরষ।

সেই থেকে তার গণমাধ্যম জগতে স্থায়ী ভাবে বিচরণ। ইংরেজি সাপ্তাহিক দি এক্সপ্রেস, মৌচাকে ঢিল ম্যাগাজিনের সম্পাদনাসহ সৃষ্টি করেছেন বাংলাদেশ টেলিভিশনে লাল গোলাপ নামক আলোচিক টক শো প্রোগ্রামের। বর্তমানে বেসরকারি টেলিভিশন বাংলা ভিশনে এ অনুষ্ঠান এখনও প্রচার হয়।

অপরদিকে ৯৩’সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে প্রথম ভালবাসা দিন পালনের সূচনা করেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকায় একাডেমি ফিল্ম সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। যেখানে প্রায় ১০ (দশ) হাজার বিদেশী মুভির ডিভিডি লাইব্রেরী রয়েছে। প্রতিষ্ঠা করেছেন ডেমোক্রেসি ওয়াচ নামে একটি সংগঠন। যার পরিচালনায় তার স্ত্রী তালেয়া রহমান। এদিকে দ্বৈত নাগরিত্ব রয়েছে শফিক রেহমানের। দীর্ঘদিন লন্ডনে বসবাসের কারণে ব্রিটিশ নাগরিকত্বও গ্রহণ করেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে তিনি জড়িত না থাকলেও এ রাজনীতিতে তিনি বিশ্বাসী।

গত ১৬ এপ্রিল শনিবার সকালে রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদকে অপহরণ ও হত্যা পরিকল্পনার অভিযোগে ২০১৫ সালের আগস্টে পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। একই সাথে আদালত কর্তৃক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করানো হয়। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে রয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই