কিলারদের খুন করে সব প্রমাণ আড়াল করছে সরকার : ইমরান

টার্গেট কিলিংয়ের কিলারদের খুন করে সব প্রমাণ আড়াল করছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।

মাদারীপুরের কলেজশিক্ষক রিপন চক্রবর্তীর ওপর হামলান ঘটনায় হাতেনাতে আটক ফায়জুল্লাহ ফাহিমের পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে এ মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার বিকেলে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে ইমরান এসব কথা বলেছেন।

তিনি লিখেছেন- ‘একদিকে সরকার নিজ দলীয় সিরিয়াল খুনিদের ফাঁসিসহ সকল সাজা মওকুফ করে দিয়ে জেল থেকে মুক্ত করছে। অন্যদিকে জনতার হাতে ধরা পড়া টার্গেট কিলারদের খুন করে সব প্রমাণ আড়াল করছে।’

‘তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? এর নাম কি ন্যায়বিচার? এটাই কি ৩০ লাখ মানুষের রক্তে অর্জিত আমার মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ?’ প্রশ্ন তোলেন তিনি।

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান লিখেন- ‘খুন যেই করুক না কেন, সে খুনি। জঙ্গি করুক, সন্ত্রাসী করুক কিংবা রাষ্ট্র করুক; সে খুনি। এখানে তবে-কিন্তুর কোনো অবকাশ নেই। একজন বোধ-বিবেচনা সম্পন্ন মানুষের কোনো খুনই সমর্থনের সুযোগ নেই।’

ফেসবুকের ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন- ‘কোনো খুনি কিংবা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এদেশের ৩০ লক্ষ মানুষ আত্মত্যাগ করেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে খুনি কিংবা নিপীড়ক রাষ্ট্র নয়। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রে পরিষ্কারভাবেই ন্যায়বিচারের কথা বলা হয়েছে।’

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র এও লিখেছেন- ‘একজন খুনিকে হত্যার মধ্যদিয়ে সবচেয়ে বেশি অবিচার করা হয় খুন হওয়া মানুষটির স্বজনদের সাথে। কেননা, অপরাধীকে খুনের মাধ্যমে পরিবারটির ন্যায়বিচার পাবার আর কোনো সম্ভাবনাই থাকে না।’

‘হাতেনাতে আটক হওয়া খুনিকে হত্যার আরও গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, এইসব খুনির বিরুদ্ধে প্রমাণ থাকে এবং ন্যায়বিচার পাওয়া সহজ হয়। পাশাপাশি এইসব ক্ষেত্রে চলমান হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের সুযোগ থাকে। তাহলে প্রশ্ন আসে ঠিক কী কারণে তাহলে এমন অপরাধীকে হত্যা করা হলো? কাকে আড়াল করতে এই হত্যাকাণ্ড, প্রশ্ন ইমরানের।

প্রসঙ্গত, মাদারীপুরের সরকারি নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রী হোস্টেলের সামনে কলেজের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীর নিজ ভাড়া বাসায় বুধবার বিকেলে হামলা চালায় তিন দুর্বৃত্ত।

এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় ফায়জুল্লাহ ফাহিমকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ফাহিমসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা চেষ্টার মামলা করে পুলিশ।

এ মামলায় শুক্রবার ফাহিমকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তবে রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে শনিবার ভোরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ফাহিম নিহত হন।

এদিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীর অবস্থা এখন পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শরফুজ্জামান রুবেল।



মন্তব্য চালু নেই