কিডনি বেচতে বাধ্য হচ্ছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা

আইন যেমন আছে, তেমনই রয়েছে আইনের ফাঁকও। আর সেই আইনকেই দীর্ঘদিন ধরে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আসত কাজ করে চলেছে ভারতের গুজরাটের একটি গ্রাম। দরিদ্র গ্রামবাসীরা জীবনধারণের জন্য বেআইনিভাবে বিক্রি করে দেন কিডনি। যা পাচার হয়ে যায় অন্য রাজ্যে। এমনকী শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, নেপালেও ছড়িয়ে রয়েছে এই চক্র।

আনান্দ শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাণ্ডোলি গ্রাম। গত এক বছরে এখানকার মোট ১১ জন বাসিন্দা অর্থের জন্য নিজেদের কিডনি বিক্রি করে দিয়েছেন। মুম্বাইয়ের এক এজেন্ট জাভেদ খান ওই গ্রামের দরিদ্র চাষী ও দিনমজুর পরিবারগুলিকে টাকার লোভ দেখিয়ে ফাঁসায় বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। জাভেদের কথা মতো অর্থের জন্য রাজিও হয়ে যান অনেকেই। তারপর ভারতের জাতীয় ক্যাপিটাল রিজিয়নে (এনসিআর) অস্ত্রোপচার করে বেআইনিভাবে তাদের কিডনি বের করে নেওয়া হয়।

বিনিময়ে দেওয়া হয় দেড় থেকে আড়াই লক্ষ টাকা। এখানেই শেষ নয়, কোনও ব্যক্তিকে কিডনি বেচার জন্য রাজি করতে পারলেও সেই ব্যক্তিকে দেওয়া হয় ২৫ হাজার টাকা। সংবাদমাধ্যম মিরর-এর এক প্রতিনিধি বেশ কিছু গ্রামবাসীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথাও বলেন। কীভাবে তাদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কীভাবে অস্ত্রোপচার হয়েছে, সে সব অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।

গুজরাটে এই ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। বেআইনিভাবে কিডনি কেনা-বেচার অভিযোগে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল পিপলাভ গ্রামের নামও। ২০০৭ সালে সেই ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল মুম্বাই পুলিশ। পাণ্ডোলি গ্রামের এই বেআইনি কাজের সঙ্গে কারা কারা যুক্ত রয়েছে, তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। গোয়েন্দারা বোঝার চেষ্টা করছেন, কীভাবে দিনের পর দিন গোপনে চলছে এই ব্যবসা। আরও কতদূর ছড়িয়ে এক জাল। গত সপ্তাহে কিডনি পাচার চক্রে চিকিৎসক অমিত রাউতকে গ্রেপ্তার করেছে গুজরাট পুলিশ।



মন্তব্য চালু নেই