কিছুই জানাতে পারছেন না ফিরে আসা নিখোঁজ মেহেদী

নিখোঁজের চার মাস ১৮ দিন পরে পরিবারের কাছে ফিরে আসা বরিশালের মেহেদী হাসান নিখোঁজ হওয়া সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারছে না। এতদিন তাকে কোথায় রাখা হয়েছে, কারা কীসের কারণে তাকে অপহরণ করেছিল এসব বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি তার কাছ থেকে। পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়ে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে মেহেদী বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। একই সময়ে মেহেদীর সঙ্গে আরও তিন তরুণ নিখোঁজ হন। তাদের কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।

মাস্টার্স পরীক্ষার্থী এই যুবক গত বছরের ১ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন। মেহেদীর বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন ঝালকাঠী সদর পুলিশে কনস্টেবলের চাকরি করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অসুস্থ এই পুলিশ সদস্য ডাক্তার দেখাতে ছেলে মেহেদীকে নিয়ে ঢাকায় বোনের বাসায় যান নভেম্বরের ১৯ তারিখ। ডাক্তার দেখানো হলে ২৯ তারিখ ফিরেও আসেন। কিন্তু মেহেদী চাকরির ইন্টারভিউর জন্য ঢাকায় থেকে যায়। ১ ডিসেম্বর বিকালে ল্যাপটপ সারার কথা বলে পরিচিত সুজনের অফিস বনানীতে যান। এরপর থেকে মেহেদীর আর কোনো খোঁজ পায়নি স্বজনরা।

বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শেষ পর্বের ছাত্র মেহেদী একই কলেজের শারমিন আক্তারকে বিয়ে করেন গত ২৮ এপ্রিল। বাড়িতে স্ত্রীর সাথে মোবাইলফোনে সর্বশেষ তার কথা হয় একই দিনের সন্ধ্যায়। এরপর থেকে মেহেদীর মোবাইলফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মেহেদীর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তিনি ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। ব্রজমোহন কলেজেও ছাত্রলীগের নানা অনুষ্ঠানে তাকে দেখা গেছে বলে ছাত্ররা জানিয়েছে।

মেহেদীর চাচা মাহাবুব হোসেন গত ৩ ডিসেম্বর বনানী থানায় এ সক্রান্ত একটি জিডি দায়ের করেন। ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকালে আকস্মিকভাবে অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের কাছে ফিরে আসে মেহেদী। এরপর বাহেরচর গ্রামে হৈ-চৈ পড়ে যায়। পরিবারের মধ্যে আনন্দ উৎসব শুরু হয়। তবে খবর পেয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।

মেহেদী হাসান নিখোঁজ হওয়া সম্পর্কে জানিয়েছেন, ওই দিন ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পরে বের হয়ে রাস্তায় এলে পেছন থেকে তাকে কে বা কারা অচেতন করে নিয়ে যায়। দীর্ঘদিন তাকে চোখবাঁধা অবস্থায় শুধু খাবার দেয়া হতো। এছাড়া অসুস্থ মেহেদী কিছুই বলতে পারেনি।

বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, মেহেদী হাসানকে বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মেহেদী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হবে।

১ ডিসেম্বর বনানী থেকে মেহেদী ছাড়া আরও তিন তরুণ নিখোঁজ হন। অপর তিনজন হলেন সাফায়াত হোসেন, জাইন হোসেন খান (পাভেল) ও মো. সুজন। তাদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। সাফায়াত ও জাইন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সুজন ড্যাফোডিল থেকে তথ্যপ্রযুক্তিতে কোর্স করে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। তাদের খোঁজ এখনো মিলেনি।



মন্তব্য চালু নেই