কারাগারের সামনে জনতার ভিড়

কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে এখন উৎসুক জনতার ভিড়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কামারুজ্জামানের ফাঁসি খুব শিগগিরই কার্যকর হতে পারে। তাই কারাগারের সামনে জনতার ভিড় জমেছে। পরস্পরের কাছে তারা জানতে চাইছেন—আজই কামরুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর হবে কি না!

বুধবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশের এলাকা ঘুরে জনতার ভিড় চোখে পড়েছে।
ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি কামারুজ্জামানকে গাজীপুর কারাগার থেকে গত মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছে। তাই তার ফাঁসি কার্যকর নিয়ে দিনভর জল্পনা-কল্পনা চলছে। আর তারা নজর রাখছেন কেন্দ্রীয় কারাগারে কি ঘটছে তার ওপর।

কামারুজ্জামানের পরিবারের পক্ষ থেকে গতকালই কারা কর্তৃপক্ষের কাছে সাক্ষাৎ করার জন্য আবেদন করা হয়। কারা কর্তৃপক্ষ বুধবার সকাল ১০টায় কামারুজ্জামানের সঙ্গে তার পরেবারের সাক্ষাতের সময় নির্ধারণ করেন।

কামারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারাগারের সামনে আসেন। সকাল সাড়ে ১০টায় তার পরিবারের ১০ সদস্য কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি পান। প্রায় ৪৫মিনিট পর তার পরিবারের সদস্যরা কামারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে কারাগার থেকে বের হন।
বের হওয়ার পর কারা ফটকে কামারুজ্জামানের বড় ছেলে হাসান ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাবা সুস্থ আছেন, তার মনোবল শক্ত আছে। ফাঁসি নিয়ে তিনি মোটেই বিচলিত নন। তিনি মরতে প্রস্তুত আছেন। যে আদর্শ পালনের জন্য তাকে ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে, সেই আদর্শ থেকে যেন তার পরিবার কখনো বিচ্যুত না হন। তার আদর্শের দল জামায়াত যুগ যুগ ধরে বাংলার জমিনে প্রতিষ্ঠা থাকবে বলে জানান।’

তখন কারা ফটকের সামনে উৎসুক জনতার ভিড় সামলাতে কারারক্ষীদের হিমশিম খেতে হয়। পরে কারারক্ষীরা লাঠিচার্জ করে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে দেন। সাধারণ মানুষ তখন সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান ‘কামারুজ্জামানের কী আজই ফাঁসি হবে? কখন হবে, তারা জানতে চান।
আতিক, কামাল, নাহিদ এবং সাত্তার নামে কয়েকজন বলেন, ‘এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম। শুনলাম-এখানে একজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তাই দেখতে এলাম। সত্যিই কি কাউকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে?’ এমন প্রশ্ন তাদের অনেকেরই।

কথা হয় কেন্দ্রীয় কারাগারের সুবেদার আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘ফাঁসি হবে এরকম খবর এখনো আমাদের কাছে আসেনি। ফাঁসির একদিন আগে অবশ্যই আমরা জানতে পারবো। এলার্ট থাকার জন্য হলেও আমাদের বলা হবে। আমরাতো জানতামই না যে, আজ পরিবারের লোকজন দেখা করতে আসবে। সাংবাদিকদের দেখে বিষয়টি জানতে পারলাম বলে জানান তিনি।

কারাগারের সামনে কয়েকজন কারারক্ষীর সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, ফাঁসি কখন হবে-তা এখনো তারা জানেন না। এ নিয়ে কারারক্ষীদের মধ্যে কোনো সাড়াশব্দ নেই।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকার খাবার হোটেলেও চলছে কামারুজ্জামানের ফাঁসি নিয়ে নানা আলোচনা।

রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, ‘সবকিছু মেইনটেইন করেই রায় কার্যকর করা হবে। সেক্ষেত্রে রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ না হলেও অন্তত শর্টকপি প্রকাশ হতে হবে। সেই শর্টকপি দিয়ে হলেও রায় কার্যকর করা যাবে।



মন্তব্য চালু নেই