কলারোয়া সীমান্তে ভারতে পাচারকালে শিশুসহ ভিকটিম উদ্ধার

জুলফিকার আলী, কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সীমান্তে ভারতে পাচারকালে বান্দরবন জেলার দুই শিুসহ দুই ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে বর্ডারগাড বিজিবি। এসময় দুই পাচারকারী ও আটক হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এমদাদুল হক শেখ জানান, বান্দরবন জেলার আলীকদম উপজেলার আলী কদম গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের স্ত্রী হাজেরা খাতুন (২৭) ও তার স্বামী ইব্রাহিমসহ শিশু সন্তান রিয়াজ (৩) ও আরিফ (৪)কে উচ্চ বেতনে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাতক্ষীরা কলারোয়া সীমান্তে নিয়ে আসে পাচারকারীরা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মাদরা বিওপির সুবেদার ফিরোজ হাওলাদার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে টহলে যান। এসময় তিনি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, কলারোয়া উপজেলার রাজপুর গ্রামের নারী পাচারকারী ইউনূচ আলীর ছেলে লিটন হোসেন(২৩) ও মৃত সাদেক আলী সরদারের ছেলে আইয়ুব হোসেন (৪০) ওই ভিকটিমদের ভারতে পাচারের উদ্যোশে রাজপুর সীমান্তের মেইন পিলার-১৩/৩ এস এর ১০ আরবির নিকটে সোনাই নদীর পাড়ে কুল বাগানে অবস্থান করছে। এসময় সংবাদের ভিত্তিতে তিনি অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করেন। পরে উদ্ধারকৃত ভিকটিমদের জিজ্ঞাবাদে জানা যায়, তাদের উচ্চ বেতনে চাকুরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নিয়ে যাচ্ছিল পাচারকারীরা। এছাড়া ওই পাচারকারীরা দীর্ঘ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সহজ সরল মানুষদের ভাল চাকুরি, বিয়ের প্রলোভনসহ নানা ধরনের কথায় মন ভুলিয়ে পাঁসপোট ও ভিসা নিয়ে ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদের দেহ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রয় করে দিচ্ছে। আর যারা তাদের প্রতারনা স্বীকার হচ্ছে তার দেশে ফিরে আসতে পারছে না। প্রথমে পাচারকারীরা গ্রামের সহজ সরল মেয়েদের মোবাইল ফোনের কল ডিভাইস পাল্টে বলা হয় আমি দুবাই, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব বা ভারতে আছি। আমার একটি বিলাস বহল বাড়ী, গাড়ী আছে। কয়েক দিন মোবাইল ফোনে ইন্টানেটে কথা বলে মেয়েদের মন ভুলিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া হয়। পরে বলা হয়। আমি আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে আসছি। ১/২দিন থেকে চলে যাবো। তুমি যদি দেখা করতে তাহলে একটু ভাল হতো। পরে পাচারকারী কৌশলে সেই মেয়েটিকে সরাসরি দেখে বলে তুমি তো অনেক সুন্দর। আমার ভাল লেগেছে। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। তোমার কোন আপত্তি নেই তো। চলো একটু নাস্তা করি, বেড়িয়ে আসি। এই বলে বিভিন্ন এলাকায় ঘোরা ঘুমি আর দামী খাবার খাওয়া। এই সব দেখে মেয়েদের মন ভুলে যায়। আর সেই সুযোগে মেয়েটিকে বিয়ে করে ওই নারী পাচারকারীকে। পারে দেশে তার স্ত্রীকে একা রাখবে না বলে সাথে সাথে পাঁপোট ও ভিসা নিয়ে বিদেশ চলে আসে। সেখানে কিছু দিন থেকে সেই মেয়েটি তুলে দেওয়া হয়। পতিতাবৃত্তির সর্দার রানীর কাছে। এভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গবির অসহায় থেকে মেয়েদের বিভিন্ন দেশে বিক্রয় করে দেওয়া হচ্ছে। এদিকে এঘটনায় কলারোয়া উপজেলার সীমান্ত প্রহরী বর্ডার গার্ড বিজিবির মাদরা বিওপির সুবেদার ফিরোজ হাওলাদার বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের-২০১২ এর ৭/৮ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই