ওমরাহ ভিসা বন্ধ কেন জানে না মন্ত্রণালয়

সৌদি আরব সরকার কি কারণে ওমরাহ ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে তা জানে না বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. চৌধুরী বাবুল হাসান বলেন, ঠিক কি কারণে সৌদি সরকারের আমাদের (বাংলাদেশি) ওমরাহ ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে তার তথ্য দেয়নি। ওমরাহ ম্যানজেমেন্টটা তারা একাই করে। হজ ছাড়া অন্য কোনো তথ্য আমাদের জানায় না তারা। এমনকি আমরা তথ্য জানতে চাইলেও না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের বেশ কিছু হজ ও ট্রাভেল এজেন্সি ওমরাহ ভিসার নামে সৌদি আরবে আদম পাচার করছিল। বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ ভিসা নিয়ে হাজারো মানুষ সৌদি আরবে রয়েছেন। অনেকেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশে ফিরে না এসে অবৈধভাবে সেখানেই অবস্থান করছেন। সৌদি সরকারও অবৈধদের চিহ্নিত করতে পারছে না।

গত ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত যারা ওমরাহ পালনের উদ্দেশে সৌদি আরব গেছেন তাদের বড় একটি অংশ দেশে ফিরে আসেনি। এ বিষয়টি সৌদি সরকারের নজরে এলে বাংলাদেশকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ব্যাপারে সতর্ক অবস্থান নেয় সৌদি সরকার।

জানা গেছে, সৌদি আরবের মিনিস্ট্রি অব ফরেন এ্যাফেয়ার্সের বেঁধে দেওয়া নতুন নিয়মে বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ হজযাত্রীদের দেশটিতে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়মে যারা ওমরাহ ভিসায় সৌদি যাবেন তাদেরকে নির্ধারিত এজেন্ট বা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। প্রতি মাসে এর সঠিক হিসাব সৌদি সরকারের কাছে প্রদান করতে হবে। কিন্তু, গত ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ১৪ থেকে ২৮ দিন মেয়াদের ভিসায় বাংলাদেশ থেকে ৪০-৫০ হাজার মানুষ ওমরাহ পালন করতে সৌদি গেলেও্‌ তাদের মধ্যে প্রায় দেড় হাজার হাজী দেশে ফিরে আসেননি।তারা অবৈধভাবে সৌদিতে থেকে গেছেন।

উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি দেশে ফিরে না আসার বিষয়টি সৌদি সরকার অবগত হওয়ার পর গত ২২শে মার্চ থেকে সম্পূর্ণভাবে ওমরাহ ভিসা প্রদান বন্ধ করে দেয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি ইব্রাহিম বাহার বলেন, আমরা যতটুকু জানি, এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের মত ওমরাহ যাত্রী সৌদি আরবে গেছেন। এর মধ্যে অনেকে সেখানে রয়ে গেছেন বলে তারা ওমরাহ ভিসা স্থগিত করেছে। যদি ১ শতাংশ সেদেশে থেকে যেত তাহলে হয়তো ভিসা বন্ধ করতো না। ১ শতাংশের বেশি রয়ে গেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারী পর্যায়ে কোনো তদবীর না করা হকে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা (সৌদি সরকার) ওমরাহ ভিসা ছাড়বে না।

‘এ দায় কার, যারা পাঠাচ্ছে তাদের নাকি সরকারের?’- এমন প্রশ্নের জবাবে হাব সভাপতি বলেন, যারা পাঠাচ্ছে দায় আসলে তাদের। গত কয়েকমাসে যারা সৌদি আরব গেছেন তারা এখনও বিক্ষিপ্তভাবে দেশে আসছেন।পরবর্তী সময়ে তদন্ত করে বের করতে হবে, কোন কোন এজেন্সির বেশি সংখ্যক লোক সেখানে থেকে গেছেন। এর উপর ভিত্তি করে ধর্ম মন্ত্রণালয় অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। হাবও ব্যবস্থা নেবে। ওইসব এজেন্সিকে কালো তালিকাভুক্ত করবো আমরা। তবে আমরাতো সর্বোচ্চ কালো তালিকাভুক্ত করতে পারি, কিন্তু এজেন্সিগুলোকে তো শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা নেই আমাদের। এটি মন্ত্রণালয়ই করবে।

হাব সূত্র জানায়, প্রতিবছর শুধুমাত্র রমজান মাসেই বাংলাদেশ থেকে ২০ হাজারের বেশি মুসল্লি পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদি আরব যান। কিন্তু ভিসা বন্ধ থাকার কারণে এবার এতো সংখ্যক মুসল্লির ওমরাহ করতে সৌদিতে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।দ্য রিপোর্ট



মন্তব্য চালু নেই