এয়ারপোর্ট নয়, বাংলাদেশ ‘রিস্কি’ কান্ট্রি

বাংলাদেশের এয়ারপোর্টের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সমস্যা থেকে নয় বরং বাংলাদেশকে ‘রিস্কি কান্ট্রি’ বিবেচনায় জার্মানির সরকারি বিমান সংস্থা লুফথানসা বাংলাদেশ থেকে মালামাল নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এমন তথ্যই জানিয়েছেন বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

তবে, জার্মানির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে কোনো কিছু জানানো হয়নি। বিমান বাংলাদেশকে পাঠানো এক ই-মেইলের সূত্রে উল্লিখিত তথ্য জেনেছেন মন্ত্রী।

মঙ্গলবার বিকেলে জার্মান কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, ‘আমি যতটুকু বুঝি এখানে রাজনীতির বাইরে অন্য কিছু নেই। জিএসপির ক্ষেত্রে যেটা হচ্ছে, সবই আমরা করছি কিন্তু কিছইু হচ্ছে না। এখানেও (বিমানের ক্ষেত্রেও) আমরা সবই করছি কিন্তু তারা সন্তুষ্ট হচ্ছে না।’

‘আমরা কী করি নাই? তাদের (ইউরোপ-আমেরিকার) অ্যাম্বাসেডরদের নিয়ে বসেছি। তারা সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছেন। এরপরও যদি কিছু না হয় তাহলে তো কিছু করার নেই।’

‘এখানে এয়ারপোর্টের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়নি। বলা হয়েছে বাংলাদেশের কথা।’ এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন ‘বাংলাদেশ কী এমন করে ফেলেছি যে, রিস্কি হয়ে গেলাম?’

গত ২৬ জুন জার্মানির সরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা লুফথানসা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের শাহজালাল বিমানবন্দরে সে দেশ থেকে আনা মাল নামালেও নিরাপত্তা নির্দেশনার অজুহাতে এখান থেকে কোনো মাল না নিয়েই চলে যায়।

এই বিষয়ে সিভিল এভিয়েশন বা মন্ত্রণালয়কে জার্মানির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক জার্মানির নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল আগামীকাল ২৯ জুন বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে।

বিমানমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরও জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর জন্য বিমানবন্দরে আলাদা ‘কেইসড এরিয়া’ করে রেখেছি। বিভিন্ন নিরাপত্তা গেট পার হয়ে সেখানে যেতে হয়। নিরাপত্তা মানদণ্ড ‘আর-থ্রি’-এর অধীনে এটা করেছি।

বিমান বাংলাদেশকে জার্মানির সরকারি বিমান সংস্থা থেকে পাঠানো ই-মেইলে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ একটি রিস্কি কান্ট্রি। এখান থেকে কোনো মালামাল জার্মানি যেতে হলে তাদের নির্ধারিত মানদণ্ডের কিছু স্ক্যানিং করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে, ইটিডি (এক্সক্লুসিভ ট্রেসিং ডিটেক্টর) এবং ইডিএস (এক্সক্লুসিভ ডিটেকটিভ সিস্টেম)।

এ বিষয়ে রাশেদ খান মেনন জানান, আমাদের ইডিএস আছে, ইটিডি নেই। কিছুদিন আগেও তারা নিরাপত্তা-সংক্রান্ত একটি মানদণ্ড ‘আরএ-থ্রি’ (রেগুলেটরি অথরিটি) বিমান বাংলাদেশ, ইতিহাদ এবং লুফথানসা এই তিনটি এয়ার লাইন্সকে দিয়ে গেছে।’

তাই আমরা মনে করি আমাদের তরফ থেকে কোনো সমস্যা নেই। তারা (মালামাল) নেবে কি না তাদের বিষয়।’

এই বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে জানানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় উদ্বেগ জানিয়ে চলতি বছরের প্রথমার্ধে ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় আকাশপথে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি মালামাল পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তৃতীয় দেশ হিসেবে যুক্ত হলো জার্মানি।



মন্তব্য চালু নেই