নুরুল আলম ডাকুয়া, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকার দলীয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গুলি করে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী জেল-হাজতে থাকা সাবেক এমপি (অব) কর্ণেল ডা. আবদুল কাদের খাঁনের (পিএস) ব্যক্তিগত সহকারী শামছুজ্জোহা সরকার ওরফে জোহাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

রোববার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এমপি লিটন হত্যা ঘটনায় সাবেক এমপি (অব) কর্ণেল ডা. আবদুল কাদের খাঁনকে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। কাদের খাঁন ও হত্যায় অংশ নেওয়া চার কিলারের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শামছুজ্জোহাকে গত সাতদিন ধরে নজরদারিতে রাখা হয়। এরপর হত্যার ঘটনায় জড়িত সম্পৃক্তার প্রাথমিক প্রমাণ মেলায় গতকাল রোববার ভোর রাতে সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি আরও জানান, আটক শামছুজ্জোহাকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে হাজির করা হবে।

আটক শামছুজ্জোহা সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত হলদিয়া গ্রামের আবদুল জোব্বারের ছেলে। তার সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা বাজারে একটি রড়-সিমেন্টের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে কাদের খান মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টি (এ) থেকে এমপি নির্বাচিত হলে শামছুজ্জোহাকে তিনি (কাদের খান) ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) হিসেবে মনোনীত করেন।
লিটন হত্যা মামলার তদন্তকারী পুলিশের একটি সুত্র জানায়, লিটন হত্যার সমন্বয়কারী সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক চন্দন কুমার সরকার গত এক বছর ধরে কাদের খাঁনের চার কিলার নিয়ে শামছুজ্জোহার নলডাঙ্গা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত বৈঠক করতেন। সেখান থেকেও কিলারদের এমপি লিটনকে হত্যার জন্য নানানভাবে পরামর্শ দেওয়া হতো। কাদের খানের পিএস শামছুজ্জোহাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আতিয়ার রহমান জানান- তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর জন্য আদালতে হাজির করা হবে।

উল্লেখ্য, ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে শাহবাজ (মাস্টাপাড়া) এলাকায় নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নিহত হন। এ ঘটনায় লিটনের ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল বাদি হয়ে অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে ১ জানুয়ারী সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।