এমপি মোসলেমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলা

’৭১ এ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়ীয়া) আসনের এমপি অ্যাড. মোসলেম উদ্দিনসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত ২০-২৫ বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহের ২নং আমলি আদালতে মামলাটি করেন।

আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক মামলাটি আমলে নিয়ে মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার প্রধান সাক্ষী হয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- ফুলবাড়ীয়া সদরের ফয়জুল বারী (৬৫), চৌদার গ্রামের আ. ছামাদ মাস্টার ওরফে টিক্কা খান (৭৮), আব্দুল মণ্ডল (৮২), কুশমাইল গ্রামের মফিজ উদ্দিন ওরফে মফে (৮২), ভালুকজান গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন ফকির (৮২), পুটিজান গ্রামের মোকসেদ আলী (৭০), এবাদুল্লাহ (৭২), কুশমাইল গ্রামের মোকসেদ আলী (৮০), ওয়াহেদ আলী মুন্সী (৮০) ও ছুরহাব আলী (৮০), কালাদহের আবুল হোসেন (৮০) ও মুছা (৭৫), পাটুলি গ্রামের আব্দুল হালিম (৬৫), আছিম তিতারচালা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস (৬৫) এবং আছম টানপাড়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিন (৬২)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মামলার আসামিরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীকারি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস, দেশদ্রোহী ও আইন অমান্যকারী লোক। ১৯৭১ সালে মোসলেম উদ্দিন স্থানীয় এমপি নির্বাচিত হন। এমপি হয়েও তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজাকার কমান্ডে যোগ দেন এবং জেলা রাজাকার কমান্ড প্রধান আব্দুল হান্নানের সঙ্গে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার শান্তি কমিটির কোষাধ্যক্ষ নিয়োজিত ছিলেন।

এসময় তিনি ফুলবাড়ীয়ায় বেশ কয়েকটি এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন এবং অগ্নিসংযোগসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। ’৭১ সালের ২৭ জুন জোড়বাড়ীয়া গ্রামের বাদীর বাড়িসহ আবু বক্কর সিদ্দিক, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুস সালামসহ ভালুকজানের পালবাড়ি ও ঋষিবাড়ির ঘর লুণ্ঠন করে পুড়িয়ে দেয়।

এরপর ৩৩ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট অফিসার ও রাজাকারদের মোসলেম এমপিসহ অন্য বিবাদীদের সক্রিয় সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট গ্রামের নিরীহ জনগণের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, খুন-জখম এবং পাক বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ফুলবাড়ীয়া থানার কৈয়ারচালা গ্রামের মালেকা খাতুনকে ধর্ষণের পর হত্যা করে।

১৯৭১ সালের ২০ জুন কুশমাইলের বসু চৌধুরীকে, ১২ জুন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদকে এবং ফুলবাড়ীয়া বাজারে আটজন ঋষিকে হত্যা ও ২৯ নভেম্বর তালেব আলী, সেকান্দর আলী, আলতাব আলীকে হত্যা করে ভালুকজান নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়।

এছাড়া সাধারণ মানুষকে হত্যা করে বধ্যভূমিতে ফেলে দেয়া হয়। এসব কর্মকাণ্ডে অ্যাড. মোসলেম উদ্দিনসহ উল্লেখিত আসামিরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই