এমপিদের তোপের মুখে অর্থমন্ত্রী

এলাকায় রাস্তা পাকাকরণের বরাদ্দ না পাওয়ায় জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। সাংসদদের ক্ষোভের জবাব দিতে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন অর্থমন্ত্রী নিজেও। এ নিয়েই মঙ্গলবার অধিবেশন ছিল সরগরম।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে পরিকল্পনামন্ত্রীর পক্ষে উত্তর দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী জানান, প্রতিটি সংসদীয় এলাকার রাস্তা-ঘাট উন্নয়নের জন্য চলতি অর্থবছরে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্য দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত সংসদ সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানতে চান, বরাদ্দের সেই অর্থ গেল কোথায়?

জবাবে আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, সেই টাকা দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হতেই সম্পূরক প্রশ্নে একই বিষয়ের অবতারণা করেন সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান। তিনি বলেন, ‘এই সংসদে সকল সদস্যদেরই একই প্রশ্ন। আমাদের প্রত্যেকের নির্বাচনী এলাকায় ২৫ কোটি টাকা করে রাস্তা-ঘাট অবকাঠামো উন্নয়ন করার জন্য বরাদ্দ দেয়ার কথা ছিল। এক বছর পার হয় গেলেও আমরা এখনো টাকা পেলাম না।’

এরপর অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নো নো…..নট এট এল। এটা ভুল ধারণা, আমি টাকা দিয়ে দিয়েছি। লোকাল গভর্নমেন্টের অধীনে বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’

তার এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই সাংসদরা না, না বলে প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। অর্থমন্ত্রীও বলেন, ‘নো নো নো …নট এট অল। প্লিজ লিসেন টু মি।’

এরপর অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে আবারো তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম পরিষদের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।

তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তা ঠিক না। আমরা কেউ টাকা পাইনি। তার পাশে বসা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে দেখিয়ে বলেন তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করুন কেউ টাকা পায়নি।’

শেখ সেলিম বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন এমপিদের নির্বাচনী এলাকায় রাস্তা পাকাকরণের জন্য যারা প্রজেক্ট নিয়েছেন তাদের টাকা দেয়া হয়েছে। কথা ঠিক নয়, টাকা দেয়া হয় নাই। কেউ টাকা পায় নাই। যদি দিয়ে থাকেন তাহলে হয়তো আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে টাকা ছাড় হয়নি। এই টার্মে আমরা কোনো টাকা পাইনি। তিনি (অর্থমন্ত্রী) বলেছেন আমি পেয়েছি। উনি অর্থমন্ত্রী পেতে পারেন। আমরা পাইনি। উনার কথা যদি সত্যি হয় তাহলে আমরা যারা পাইনি এক সপ্তাহের মধ্যে এ টাকার ব্যবস্থা করুন।’

এরপর আবারো ফ্লোর নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি। এখনো তাই বলছি। টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। লোকাল গভর্নমেন্টের মাধ্যমে বাজেটের সময়ই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। লোকাল গভর্নমেন্ট যখন ছাড় দেবে তখনই এটা বাস্তবায়ন হবে।’

মন্ত্রীর এই বক্তব্যে সাংসদরা আবারো না, না বলে ওঠেন।

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই