» ফলো আপ :

এডমিন প্রধান গ্রেফতার হলেও বাঁশেরকেল্লা চালু!

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দাবি অনুযায়ী বহুল সমালোচিত ফেসবুক পেজ বাঁশেরকেল্লার এডমিন প্রধান গ্রেফতার হয়েছেন। যার নাম খোন্দকার মো. জিয়া উদ্দীন ফাহাদ। এরপরেও বাঁশেরকেল্লা পেজটি কিভাবে চালু রয়েছে তা নিয়ে পাঠকের মনে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ এডমিন প্রধানকে (!) ধরতে পারলেও বন্ধ করতে পারছে না বাঁশেরকেল্লা সাইটটি।

এদিকে পুলিশের দাবি অস্বীকার করে বাঁশেরকেল্লার পক্ষ থেকে একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন টেলিভিশনে ও অনলাইন নিউজে ব্রেকিং নিউজ দেয়া হচ্ছে- ‘বাঁশেরকেল্লা পেইজের প্রধান এডমিন আটক। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনাদের প্রিয় পেইজ বাঁশেরকেল্লার প্রধান এডমিনসহ সকল এডমিন নিরাপদ আছেন, আলহামদুলিল্লাহ।’

নোটিশে আরো লেখা হয়েছে, ‘এর আগেও কয়েকবার এরকম নাটক করে এডমিন গ্রেপ্তারের গুজব ছড়িয়েছিল সরকার। মেইনস্ট্রিম মিডিয়া সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রন করার সাথে সাথে তারা স্যোশাল মিডিওয়ার উপরও কালো থাবা ফেলার অপচেষ্টা করে আসছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু জনতার কথা কি আর আটকে রাখা যায়!! সকলের কাছে দোয়া চাই, যেন অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও সব সময় আমরা সত্যের পথে অবিচল থেকে সাহসিকতার সাথে সত্য উন্মোচনের কাজ চালিয়ে যেতে পারি। আল্লাহ আমাদেরকে সাহায্য করুন। আমীন।’

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মূখপাত্র মনিরুল ইসলাম শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে ফাহাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ফাহাদ বাঁশেরকেল্লাসহ অর্ধশতাধিক ফেসবুক পেজের এডিটোরিয়াল এডমিন ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে ফাহাদ জানিয়েছেন, তিনি নিজ নামে ও ছদ্মনামে এসব ফেসবুক পেজ পরিচালনা করে আসছিলেন। এসব ফেসবুক আইডি ও ই-মেইলের মাধ্যমে ফাহাদ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন উসকানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য, গ্রাফিক্স (ছবি) প্রচার করতেন।’

ফাহাদ যদি বাঁশেরকেল্লার এডমিন প্রধান হয়েই থাকেন তবে সেই পেজ বন্ধ হচ্ছে না কেন। সেই প্রশ্ন এখন সবার মনে।
আবার ফাহাদের বাবার ভাষ্য অনুযায়ী জানা যায়, ফাহাদকে গত ৯ মার্চ কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের তার মেয়ের বাসা থেকে তুলে এনেছে গোয়েন্দা পুলিশ। চারদিন অস্বীকার করার পর শুক্রবার তাকে বাঁশেরকেল্লার সঙ্গে জড়িয়ে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ফাহাদ এর আগে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। পুরো পরিবার সরকার দলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এক ছেলে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিষ্ট্রেট। তিনি নিজেও (ফাহাদের বাবা) একজন মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার। বর্তমানে বাঁশখালি উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।

অন্যদিকে গোয়েন্দা পুলিশের যে দল নেতৃত্ব দিয়ে ফাহাদকে গ্রেফতার করেছেন তাদেরই একজন জানান, ২০১৩ সালে বাঁশেরকেল্লার মুল পেজ বন্ধ হওয়ার পর নতুন করে চালু হয়। এরপর শুরু হয় তদন্ত। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গোয়েন্দারা জানতে পারে চট্রগ্রাম বিভাগের কোনো এক স্থান থেকে বাঁশেরকেল্লা পরিচালিত হয়ে আসছে।

গত কয়েকদিন আগে তারা জানতে পারেন কুমিল্লায় অবস্থান করছেন ওই ব্যক্তি। এরপর গত সোমবার (৯মার্চ) বিকেল থেকেই হানা দেওয়া হয়। সোমবার ফাহাদ গ্রেফতার হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও আসলে সেদিন গ্রেফতার করা হয়নি। ওইদিন ফাহাদ সেখান থেকে সরে পড়ে। এরপর বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার করা হয়।

উল্লেখ্য, ফেসবুকে বাশেঁর কেল্লা পেইজটির লাইক সংখ্যা ৯ লাখের ওপরে। জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, রাষ্ট্র ও ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর প্রচারণা চালানোর অভিযোগে ২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পেইজটি বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপনস টিম। কিন্তু পরে `নিউ বাঁশেরকেল্লা` নামে নতুন করে তা চালু হয়।



মন্তব্য চালু নেই