উপকূলে আঘাত হেনেছে ‘রোয়ানু’ (ভিডিও)
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু। ইতিমধ্যে এটি বরগুনা ও পটুয়াখালী অতিক্রম করেছে। পরে এটি চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, শনিবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে রোয়ানু চট্টগ্রামে আঘাত হানে।
তিনি আরো জানান, রোয়ানু শ্রীলঙ্কা থেকে এ পর্যন্ত প্রচুর বৃষ্টি ঝরিয়ে এসেছে। বৃষ্টি হলে ঘূর্ণিঝড় এমনিতেই দুর্বল হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। এই বেগ ২০০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার হলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকত। তারপরও উপকূলীয় অঞ্চলে এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা আতিকুর রহমানও রোয়ানুর আঘাত হানার কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোয়ানু চট্টগ্রামে আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে বিষখালী, পায়রা ও বলেশ্বর নদীর জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গেছে। ফলে বরগুনার বেড়িবাঁধের বাইরের নিম্নাঞ্চলের ৩২ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রোয়ানুর প্রভাবে ভারী বর্ষণে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ওইসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
উপজেলার সোনাদিয়া, নলচিরা, সুখচর, তমরদ্দি, চরঈশ্বর ইউনিয়নের ২৫টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসান মো মাঈন উদ্দিন জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুর্যোগ কবলিত এলাকায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত প্লাবিত এলাকার মানুষকে সহযোগিতা করা হবে।
এর আগে শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছিল, ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার দুপুর বা বিকেল নাগাদ বরিশাল ও চট্টগ্রামের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ‘রোয়ানু’ প্রভাবে শনিবার ভোর থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এ অঞ্চলের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার-পাঁচ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
রোয়ানুর কারণে চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় আসবে।
কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
https://youtu.be/z13JYhF2D88
মন্তব্য চালু নেই