ঈশ্বরদীতে মৈত্রী ট্রেনে বিজিবির ফাঁকা গুলি

পাবনার ঈশ্বরদীতে ঢাকা-কোলকাতাগামি মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশির সময় যাত্রী হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। বিজিবির আকস্মিক অভিযানের কারণে ট্রেনটি নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে ২০ মিনিট দেরিতে ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। অভিযানের সময় ট্রেনযাত্রী ও স্থানীয়দের সঙ্গে বিজিবির হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। ২০ মিনিট তল্লাশি করে তারা যাত্রীদের প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল ভর্তি ২০/২৫ টি ব্যাগ কোনো প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা ও জব্দ তালিকা ছাড়াই জনরোষে পড়ে বিজিবি এ সময় ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৩৪ মিনিটের সময় মৈত্রী ট্রেনটি ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংসন স্টেশনে এসে থামে। প্লাটফর্মে অবস্থানরত বিজিবি সদস্যরা ট্রেনটি থামার সঙ্গে সঙ্গে প্রথম শ্রেনীর কোচ থেকে শুরু করে বিভিন্ন কোচে তল্লাশি করে যাত্রীদের ব্যাগ বের করে বিজিবি’র গাড়িতে উঠাতে থাকে। বিজিবির সদস্যরা ট্রেনের কামরায় প্রবেশ করে এলোপাথাড়ি ভাবে যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশি শুরু করে। এ সময় তারা প্রায় ২০/২৫ জন যাত্রীর লাগেজ ট্রেন থেকে নামিয়ে তাদের গাড়িতে ওঠায়। এ ঘটনায় যাত্রীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ট্রেন যাত্রীদের বিক্ষোভের সঙ্গে স্টেশনে অবস্থানরত কৌতূহলী মানুষেরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেন।

বিজিবি সদস্যরা ট্রেন থেকে ভারতীয় মালামাল সন্দেহে জোর করে যাত্রীদের লাগেজ নামিয়ে নেয়ার সময় হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। স্টেশনে অবস্থানরত পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা কর্মী, আনসারসহ ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে জড়িতরা অভিযোগ করেন, বিজিবি সদস্যরা ট্রেন থেকে আকস্মিক ভাবে মালামাল নামিয়ে নিয়ে গেলেও কোনো জব্দ তালিকা তৈরি অথবা রেল থানায় জমা দেননি। এদিকে তল্লাশির সময় স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বিজিবি সদস্যদের নাম ও তাদের অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে দ্রুত স্টেশন ত্যাগ করেন।

ট্রেনযাত্রী আবদুল হালিম জানান, বিজিবির সদস্যরা তার ব্যাগে থাকা ওষুধ, ক্যামেরাসহ প্রায় ৮০ হাজার টাকার জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। কোচ ডি-১/৬ আসনের ঢাকাগামী যাত্রী আলাল, শওকত খান, মানিক, কোলকাতার বাসিন্দা মেনোতারাসহ বিভিন্ন যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের ব্যবহার করার জন্য কেনা কাপড়, কসমেটিক ও ভিডিও ক্যামেরাসহ বিভিন্ন প্রকার মালামাল বিজিবি’র সদস্যরা কোনো প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়াই জোরপূর্বক নামিয়ে নেয়। যাত্রী বনানী বিশ্বাস জানান, একটি আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী ট্রেনে বিজিবি যেভাবে তল্লাশি চালিয়ে যাত্রীদের হয়রানি করেছে তা দেখে মনে হচ্ছে তারা ট্রেনে ডাকাতি করতে উঠেছিল।

ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, জিআরপির সদস্যরা নিয়ম মাফিক মৈত্রী ট্্েরন পাছিংয়ের দায়িত্বে ছিলো। বিজিবি’র তল্লাশি সম্পর্কে আমাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়নি এমনকি তারা এই ট্রেনে তল্লাশি করবে সে বিষয়েও জিআরপি থানা পুলিশ বা কাউকে জানানো হয়নি। বিজিবি সদস্যরা রেলওয়ে থানার সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ না করেই ট্রেনে অভিযান চালায়।



মন্তব্য চালু নেই