প্রধান বিচারপতি এস.কে সিনহার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী

‘আলোচনার মাধ্যমেই ভুল বোঝাবুঝির সমাধান হওয়া উচিত’

আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে কোনও ভুল বোঝাবুঝির সমাধান করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার উদ্দেশে তিনি একথা বলেছেন।

শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের জন্য নবনির্মিত আবাসিক ভবন’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ থাকে। এই তিন অঙ্গ একে অপরের সম্পূরক হিসেবে কাজ করবে। এখানে কে কাকে সম্মান করবে, কে কাকে করবে না, কে কার সিদ্ধান্ত মানবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব চললে রাষ্ট্র সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে না। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই সবার কিছু না কিছু ক্ষমতা থাকে। জনস্বার্থে সেই ক্ষমতা আমরা কতটুকু প্রয়োগ করতে পারি আর কতটুকু পারি তার দিকে খেয়াল রাখা উচিত নয়। ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে জনস্বার্থকে বিবেচনায় রাখতে হবে।’

আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে পার্লামেন্টে আইন পাস হয় না। আইনটা একটা মন্ত্রণালয় থেকে আসে। তারপর ক্যাবিনেট ডিভিশনে আসে। সেখান থেকে আমরা ক্যাবিনেটে বসি, সিদ্ধান্ত দেই। এরপর এটা চলে যায় আইন বিভাগে। সেখান থেকে আবার ক্যাবিনেট আসে। এরপর সেটা চলে যায় পার্লামেন্টে। আর্থিক সংশ্লিষ্টতা থাকলে অর্থ মন্ত্রণালয় হয়ে চলে যায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে। তারপর আসে পার্লামেন্টে। পার্লামেন্টে উত্থাপনের পর বিরোধী কারও আপত্তি থাকলে তারা তা জানায়। যদি সে আপত্তি গ্রহণযোগ্য হয় সেটা গ্রহণ করা হয়। গ্রহণযোগ্য না হলে চলে যায় পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে। সেখানে আলাপ-আলোচনাসহ নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আইন পাস হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা আইন এতগুলো ধাপ পেরিয়ে পাস হয়। সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলা আছে, ক্ষমতার মালিক হচ্ছে জনগণ। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আইন প্রণয়ন করছে। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে জন প্রতিনিধিদের সতর্ক থাকতে হয় যাতে জনস্বার্থ ক্ষুণ্ন না হয়। সেই আইন দুজন বসে নাকচ করে দিলে আর কিছুই করার থাকলো না। এতদিন ধরে খাটাখাটুনি করলো সবগুলো ব্যর্থ হয়ে গেল। এসব ক্ষেত্রে আরও বিবেচনা করা উচিত।’

প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর ও বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া। এখানে কিন্তু আমরা কোনও ক্ষমতা নেই। সংবিধানেই আছে রাষ্ট্রপতি যখন বিচারপতি নিয়োগ দেন, তখন তিনি প্রধান বিচারপতির পরামর্শক্রমে নিয়োগ দেবেন। এখানে কোনও কিছু হলে আমি মনে করি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করাটাই ভালো। এ নিয়ে আমাদের মাঝে দ্বন্দ্ব হোক তা চাই না। বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের বিষয়ে জনগণের মাঝে একটা ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে। আমি মনে করি যে কোনও বিষয় উঠলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত।



মন্তব্য চালু নেই