‘আমি ছাত্রলীগ নেতা, আমার একটা সম্মান আছে!’

বুধবার দিন পেরিয়ে রাত তখন তিনটা বেজে দুই মিনিট। তেজগাঁওয়ের টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়-বুটেক্সের বিপরীতে বিজি প্রেসের সামনে পুলিশি চেকপোস্ট বসানো। সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন এক এএসআইসহ চার পুলিশ কনস্টেবল।

হঠাৎই তিন তরুণকে বেশ গতিতে বাইক ছুটিয়ে আসতে দেখা গেল। দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য থামার সিগনাল দিলেন। কিন্তু আরোহীরা এমন ভাব করলেন যেন দেখতেই পাননি। বাইকের পেছনে বসা ব্যক্তি মুখ ঘুরিয়ে উল্টো হাত নাড়ানি দিলেন পুলিশকে। তবে পুলিশ সদস্যেদের তাৎক্ষণিক হাঁকডাকে চেকপোস্ট থেকে প্রায় ১০০ ফিট এগিয়েও ফিরে আসলেন তারা।

চেকপোস্টে জেরার মুখে বাইকে বসা মাঝের ছেলেটি বেশ হাসিমুখেই জানালেন, ‘ক্ষুধা লেগেছে। তাই আমরা মহাখালীর দিকে খেতে যাচ্ছি।’

‘খেতে যাবেন যান। কিন্তু বাইকে তিনজন তো বেআইনি। একসাথে উঠেছেন কেন?’ এএসআই ওয়ারিছের প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই মাঝের তরুণ বাইকে থেকে নেমে পড়লেন। আঙুল উচিয়ে জানালেন নিজের পরিচয়- ‘আমি স্বপন। বুটেক্সের ওসমানী হল ছাত্রলীগের রানিং অরগানাইজিং সেক্রেটারি। এসব আইন বলে লাভ নাই। আইন আমরাও জানি।’

Chatra-League-butex-2

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার দায়িত্বরত ওয়ারিছ ছাত্রনেতার কথা মানতে নারাজ। সাফ বলে দিলেন, ‘আপনি যেই হন, গাড়িতে তিনজন যাওয়া যাবে না। এটা বেআইনি। একজন হেঁটে যাবেন। দুজন বাইকে চলে যান।’

বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সেই নেতা বেশ বিরক্তি নিয়েই জবাব দিলেন পুলিশকে, ‘আমি ছাত্রলীগের নেতা। আমার একটা সম্মান আছে। আপনি ওভাবে কথা বলবেন না!’

পুলিশের ওই কর্মকর্তা যতবারই বোঝানোর চেষ্টা করলেন। ‘ছাত্রনেতা’ ততই উত্তপ্ত হলেন। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে একই থানার আরও দুজন পুলিশ কর্মকর্তা বাইকে টহল দিতে দিতে চেকপোস্টে পৌছালেন। তারাও পরিচয় পেয়ে ওই নেতাকে নরমভাবে বোঝালেন। কিন্তু কিছুতেই গললেন না, পণ করেছেন তিনজন মিলে বাইকে যাবেনই।

কিছুক্ষণ পরে ফোনের অপরপ্রান্তে থাকা জনৈক প্রভাবশালী ব্যক্তির সাথে কথোপকথনের পর পুলিশ কর্মকর্তারা ঝামেলা না বাড়িয়ে ছেড়ে দিলেন। দ্রুতই বাইক ছুটিয়ে স্থান ত্যাগ করল তিন তরুণ।



মন্তব্য চালু নেই